আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতি সংঘের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিরা নিজ মাতৃভূমির ৫৫ শতাংশ ভূমি ছেড়ে দেয় ইসরায়েলর হাতে। মূলত এরপরই মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের স্থায়ী আসন গেড়ে বসে এই ইহুদীবাদীরা।
তবে এই রাষ্ট্রটিকে বিশ্বের সব মুসলিম রাষ্ট্রই অবৈধ আখ্যা দিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে তাদের সীমানা সম্প্রাসরণ চেষ্টা অব্যহত রাখেন।
এদিকে এখন আর ইহুদীবাদীরা সীমানা সম্প্রসারণই নয়, ফিলিস্তিনিদের উপর প্রভাব বিস্তার করে ইহুদী ধর্মও ঢুকিয়ে দিচ্ছে। যা অনেকটা বাধ্য হয়েই বহু ফিলিস্তিনির নতুন প্রজন্মরা গ্রহণও করছেন
ফিলিস্তিনের স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী ও কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলের দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের স্কুলগুলোতে ইসরায়েলী পাঠ্যক্রম চাপিয়ে দিতে তাদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ প্রদান করছে ইসরায়েল। বর্তমানে পূর্ব জেরুজালেমের প্রায় সবগুলো স্কুলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রণীত পাঠ্যসূচি ব্যবহার করা হয়। এর আগে এলাকার স্কুলগুলোর জন্য ব্যবহার করা হতো জর্দানের পাঠ্যসূচি।
ইসরায়েলের এ ধরনের প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনীরা। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, পূর্ব জেরুজালেমে বাস করা ৩ লাখ ফিলিস্তিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে ইসরায়েল। এ লক্ষ্যে পূর্ব জেরুজালেম থেকে পশ্চিম তীরকে আলাদা করার জন্যই ফিলিস্তিনের পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন ঘটাতে চাইছে ইসরায়েল। অথচ ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হওয়ার কথা রয়েছে পূর্ব জেরুজালেম।
এদিকে এঘটনায় ফিলিস্তিনের শিক্ষামন্ত্রী সাবরি সাইদাম বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের জাতীয় পরিচয়ের ওপর আঘাতের অংশ হিসেবে ইসরায়েল আমাদের পাঠ্যক্রমের ওপর এ আঘাত হানার চেষ্টা করছে। দেশটি তার অবৈধ দখলদারিত্ব মজবুত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
তবে ইসরায়েলের এ ধরনের প্রচেষ্টা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখলের পর প্রথম ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলী পাঠ্যক্রম চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল দেশটি। এর প্রতিবাদে তখন ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা কয়েক মাস ধরে আন্দোলন অব্যহত রাখে। তাদের আন্দোলনে কারণে ইসরায়েলের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
তবে ইসরায়েলের শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেট জানান, ইসরায়েলী পাঠ্যক্রম অনুসরণ করা স্কুলগুলোর প্রতি তিনি উদার থাকবেন। তার ভাষায়, ‘আমার নীতি স্পষ্ট। আমি ইসরায়েলীকরণ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ যেসব স্কুল ইসরায়েলের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করবে তাদের জন্য অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ফিলিস্তিনের একটি সুশীল সমাজের প্রধান জাকারিয়া ওদেহ বলেন, ‘রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে ফিলিস্তিনীদের ইহুদী বানানোর জন্য শ্রেণিকক্ষে তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে চাইছে ইসরায়েল। কারণ রাজনৈতিক সমস্যাই তাদের হতাশার প্রধান কারণ।
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন