আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আরব উপদ্বীপ— অঞ্চলটি পরিচিত এটির কঠোর মরুভূমির জন্য। তবে এটি একটি সময় তৃণভূমিতে পরিণত হতে পারে। সঙ্গে এখানে প্রবাহিত হতে পারে নদীও। এমন তথ্য জানিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল্লাহ আল মিসনাদ।
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছিলেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত সংগঠিত হবে না যতক্ষণ আরব ভূখণ্ড আবারও তৃণভূমিতে পরিণত এবং এখানে নদী প্রবাহিত না হবে। অর্থাৎ পৃথিবী ধ্বংসের আগে আরবের মরুভূমিগুলো সবুজে ছেয়ে যাবে এবং সেখানে নদীর সৃষ্টি হবে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আব্দুল্লাহ আল মিসনাদ বলেছেন, চারভাবে মরুভূমিগুলো সবুজে পরিণত হওয়ার তীব্র সম্ভাবনা রয়েছে।
তার মতে, এমনটি প্রথমে হতে পারে মানব-প্ররোচিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। তিনি বলেছেন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার প্যাটার্নের পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলে যে শুষ্ক আবহাওয়া রয়েছে সেটি পাল্টে যেতে পারে। বিষয়টি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, আরব উপদ্বীপের বায়ুমণ্ডল ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসতে পারে। এতে করে আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগর থেকে আদ্র বাতাস এই অঞ্চলে ঢুকবে। এর প্রভাবে সেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এতে ৭ হাজার বছর আগে আরব উপদ্বীপ যেমন সবুজ ছিল এটি আবার তেমন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, গত দুই বছর সৌদিতে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে সেটি তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তিনে বলেন, সৌদি আরবে বিশাল অগ্ন্যুৎপাত শুরু হতে পারে। যা সেখানকার আবহাওয়া পরিবর্তন করে দেবে। সৌদির পূর্বাঞ্চলে দুই হাজার আগ্নেয়গিরি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাইফের কাছে অবস্থিত আল-ওয়াবাহর মতো আগ্নেয়গিরিতে যদি বিস্ফোরণ ঘটে তাহলে এটির প্রভাব হবে বিশাল।
বিস্ফোরণের কারণে সূর্যের আলো ঢাকা পড়তে পারে। এতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমে যাবে। যেটির প্রভাব পড়বে এই অঞ্চলে। এরমাধ্যমে সেখানে আদ্র বাতাস জমা হবে। এতে শুকনো মরুভূমি উর্বর ভূমিতে পরিণত এবং সেখানে নদীর প্রবাহ শুরু হতে পারে।
তৃতীয় সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তিনি পৃথিবীর সঙ্গে বিশাল উল্কার সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করেছেন। এমনটি হলে বায়ুমণ্ডলে মহাকাশীয় ধুলো ও ধ্বংসাবশেষ আসবে। এতে করে সূর্যের আলো কয়েকমাস এমনকি কয়েক বছর পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রবেশ করবে না। এতে আরব উপদ্বীপ একটি ঠান্ডা অঞ্চলে পরিণত হবে। যেখানে কোনো মানুষ বসবাস করতে পারবে না।
চতুর্থ কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, মহাকাশীয় বড় কোনো পরিবর্তন যদি ঘটে, তাহলে জলবায়ুরও নাটকীয় পরিবর্তন ঘটবে। যারমধ্যে অন্যতম হলো পৃথিবীর অক্ষের স্থানচ্যুতি। এতে পৃথিবীর অবস্থানের পরিবর্তন হবে। এরপ্রভাবে বায়ুমণ্ডলীয় চাপকেন্দ্রে পরিবর্তন ঘটে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এবং আরব উপদ্বীপ সবুজে পরিণত হতে পারে। সূত্র: দ্য নিউ আরব