আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ দিনের গৃহযুদ্ধে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সিরিয়া। সরকার ও বিদ্রোহীদের অনড় অবস্থানের কারণে সেখনে দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে চলছে বিশ্ব শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর প্রক্সি যুদ্ধ। এতে গৃহযুদ্ধ মোড় নিয়েছে শক্তি পরীক্ষার লড়াইয়ে। সেখানে যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া। ফলে কিছুটা হলেও শান্তির বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।
দেশ দু'টি জানিয়েছে, আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি থেকে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। তবে দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে এই যুদ্ধবিরতির আওতায় থাকছেনা জঙ্গী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট এবং নুসরা ফ্রন্ট।
অন্যদিকে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, দিনে দিনে দেশটিতে সহিংসতা বাড়ছে।
সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার বিষয়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো গত ১২ই ফেব্রুয়ারি একমত হয়েছিলো যে এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর এখন শনিবার থেকে তা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
সিরিয়ার যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সিরিয়ার সংঘর্ষে যেসব পক্ষ যুদ্ধবিরতি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে এবং শর্ত মেনে নিয়েছে তাদের ক্ষেত্রেই এ বিরতি প্রযোজ্য হবে"।
তবে ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠী, নুসরা ফ্রন্ট এবং জাতিসংঘের চিহ্নিত অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন এ যুদ্ধবিরতির আওতায় পড়বে না। তাদের ওপর সিরিয়া, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বিমান হামলা চলবে।
ওদিকে জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ইয়ান এলিয়াসন বলেন, যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা খুব একটা সহজ হবেনা। লড়াই বন্ধের ওই প্রক্রিয়ায় যদি আল নুসরা বা আইএস নিয়্ন্ত্রিত এলাকাগুলো না পড়ে তাহলে যুদ্ধবিরতি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা সত্যিই অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয় হবে এবং পরবর্তীতে তার মুখোমুখি হতে হবে বলছিলেন মি এলিয়াসন । তিনি বলছেন সবাই যদি একত্রিত না হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।
দুই দেশের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী দলগুলোকে ২৬শে ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতের মধ্যেই যুদ্ধবিরতিতে তাদের অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বিরতির সময়টিতে রাশিয়া ও সিরিয়া ওই দলগুলোর ওপর যে কোনও বিমান হামলা বন্ধ করবে।
এদিকে জাতিসংঘ সমর্থিত এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে সিরিয়ায় ব্যাপকহারে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হচ্ছে এবং দিনে দিনে সেখানে সহিংসতা বেড়েই চলেছে। যুদ্ধে লিপ্ত দলগুলো সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে প্রতিনিয়ত হামলা করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হচ্ছে সিরিয়ার সরকার বাহিনী ও ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠী উভয়ের কার্যক্রম মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস