আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগে থেকেই তাদের বিয়ের কথা বার্তা পাকা হয়ে ছিল। আংটি বদলেরও দিনক্ষণ বেশ আগেভাগেই ঠিক করা হয়। কিন্তু সেই দিনটায় রাস্তায় অবরোধ। ফলে আংটিবদল পর্ব বাতিল হয়ে গেল। তাই বলে বিয়েও বাতিল হবে? না, তা হতেই পারে না। যে করেই হোক বিয়ের পিঁড়িতে বসবেনই কনে। তাই শেষ পর্যন্ত কন্যাকে চার্টার্ড বিমানে উড়িয়ে নিয়ে গেলেন বাবা। অতপর নির্বিঘ্নে সম্মন্ন হল বিয়ে।
প্রতিবেশি ভারতে ঘটেছে এই ঘটনা। কনের বাবা রাজীব গুপ্ত। তারা থাকেন হরিয়ানার কারনালে। কন্যা সাক্ষী এবং স্ত্রীকে নিয়ে সাতসকালেই গাড়িতে দিল্লি রওনা হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে পরিবারের বাকি সদস্যেরা। কিন্তু এক নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধের জেরে পানিপথ ছাড়িয়ে তাঁরা আর এগোতে পারেননি।
কনের চাচা বলেন, ভেবেছিলাম, আজ কিছুটা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সে কারণে গাড়ি নিয়েই বেরিয়েছিলাম। শেয পর্যন্ত সাক্ষীকে যে দিল্লি পাঠানো গিয়েছে, এই ভাগ্যি!
সংরক্ষণের দাবিতে জাঠ-বিক্ষোভ আজ নবম দিনে পড়ল। হরিয়ানার বিজেপি সরকার জাঠদের জন্য সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর প্রশাসনের ধারণা হয়েছিল, বিক্ষোভ কিছুটা কমবে। কিন্তু সোনিপতে রাস্তা অবরোধকে কেন্দ্র করে অশান্তি তুঙ্গে ওঠে।
একাধিক সরকারি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জওয়ানেরা অবরোধ তুলতে গেলে বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুড়তে শুরু করে। এরপর গুলি চালায় সেনা। মারা যান তিনজন। এই নিয়ে জাঠ বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা হল ১৯। হরিয়ানা সরকার জানিয়েছে, নিহতের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা এবং চাকরি দেওয়া হবে।
রোহতক শহরে কিছুটা শান্তি ফিরলেও নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হিসার। সেখানে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। তবে ‘অল ইন্ডিয়া জাঠ আরক্ষণ সংঘর্ষ সমিতি’ সন্ধ্যায় জানিয়েছে, তারা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে।
এদিকে, আজ ভোর ৪ টায় হরিয়ানার মুনাক খাল দখলমুক্ত করে সেনা এবং সিআরপিএফ। ফলে দিল্লির জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এজন্য টুইটারে কেন্দ্র এবং সেনাকে ধন্যবাদ জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। যদিও জলের সমস্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আজ ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় আম আদমি পার্টির সরকারকে।
প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর রাজ্য সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের উচিত সরকারি পর্যায়ে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া। কিন্তু আপনারা তা না করে সুপ্রিম কোর্টে চলে আসেন। এসি ঘরে বসে আপনাদের ধারণা, সব কিছু মুখের সামনে সাজিয়ে দেওয়া হবে!
জাঠ বিক্ষোভ নিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। জাঠ সংরক্ষণ নিয়ে কেন্দ্র একটি কমিটি গড়লেও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত আজ কলকাতায় বলেন, কারা সংরক্ষণ পাওয়ার যোগ্য, তা স্থির করতে অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করা উচিত। তাহলে স্বার্থান্বেষীরা সুবিধা করতে পারবে না।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস