আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা রাজ্যে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। স্থানীয় আত্মরক্ষামূলক বাহিনীকে ভুলবশত অপরাধীচক্র ভেবে শনিবার দিবাগত রাতে এই হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রবিবার এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এই ঘটনাটি ছিল দ্বিতীয় বড় ধরনের দুর্ঘটনাজনিত বিমান হামলা, যেখানে বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।
এর আগে ২৫ ডিসেম্বর প্রতিবেশী সোকোটো রাজ্যে জিহাদিদের লক্ষ্য করে চালানো এক অভিযানে দুটি গ্রামে বোমা বিস্ফোরণে অনেক প্রাণহানি হয়। দেশটির সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে গ্রামে ত্রাস সৃষ্টি করা অপরাধীচক্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই অপরাধীরা গ্রামে হামলা চালিয়ে লুটপাট, হত্যাকাণ্ড ও অপহরণ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাঈদু ইব্রাহিম জানান, দাঙ্গেবে গ্রামে অস্ত্রধারীদের তাড়িয়ে দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা যখন তুঙ্গার কারা গ্রামে পৌঁছয়, তখন যুদ্ধবিমানটি তাদের ওপর বোমা ফেলে।
হামলার পর ১৬টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং গুরুতর আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দাঙ্গেবে গ্রামের বাসিন্দারা আশপাশের প্রায় ১৫টি গ্রামে ফোন করে অস্ত্রধারীদের মোকাবেলায় সাহায্য চেয়েছিল। সশস্ত্র মোটরসাইকেলচালকরা গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর পুড়িয়ে গবাদি পশু লুট করেছিল বলে জানান আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বুবে নামারে। তিনি বলেন, ‘১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ আজ সকালেও লাশ খোঁজার কাজ চলছে।’
এই অঞ্চলে মোতায়েন থাকা সেনাদের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুবকর আবদুল্লাহি এএফপির প্রশ্নে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
এদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিহতের সংখ্যা ২০ জন বলে জানিয়েছে। রবিবার এক বিবৃতিতে এই মানবাধিকার সংস্থা নাইজেরীয় কর্তৃপক্ষকে ‘তুঙ্গার কারা গ্রামে অন্তত ২০ জন নিহত হওয়া বিমান হামলার’ বিষয়ে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
এএফপির তথ্য অনুসারে, অতীতেও দেশটিতে জিহাদিদের ও অপরাধীচক্রের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে উত্তর-পশ্চিমের কাডুনা রাজ্যের তুদুন বিরি এলাকায় একটি ইসলামিক ধর্মীয় সমাবেশকে ভুলবশত অপরাধীচক্র ভেবে চালানো বিমান হামলায় অন্তত ৮৫ জন নিহত হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্যামেরুন সীমান্তবর্তী রান শহরে জিহাদি সহিংসতায় বাস্তুচ্যুত ৪০ হাজার মানুষের একটি শিবিরে সামরিক বাহিনীর বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১১২ জন নিহত হয়।