আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসেন সর্বদা আতঙ্কিত থাকে ফিলিস্তিনিরা। প্রায় প্রতিদিনই নিজ দেশে পরবাসীর মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে তাদের। তারপর আবার মাঝে মধ্যেই প্রাণঘাতি যুদ্ধ। এসবের মধ্যেও বিশ্বকে জয় করলেন এক ফিলিস্তিনি নারী। পশ্চিমতীরে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। তারপর তিনি নতুন এক শিক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করেন।
অহিংসাকে বিকশিত করার শিক্ষা পদ্ধতির প্রবর্তক এক ফিলিস্তিনি নারী শিক্ষক একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন।
হানান আল-রবকে (৪৩) গ্লোবাল টিচার প্রাইজ প্রতিযোগিতার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান দিয়েছে ব্রিটেন ভিত্তিক ভার্কে ফাউন্ডেশন।
তুরস্কের আনাদলু বার্তা সংস্থাকে হানান বলেন, আমার শিক্ষা পদ্ধতিতে খেলার মাধ্যমে শিক্ষা এবং অহিংসার বিস্তারকে গুরুত্ব দেয়া হয়।
তিনি জানান, তার শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যবোধ শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কিছু আচরণগত সমস্যার সমাধান হচ্ছে।
হানান বলেন, ইসরাইলি দখলদারিত্বের কারণে আমাদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনেক আচরণগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এই শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে আমি এসব আচরণগত সমস্যার সমাধান করতে পারছি এবং একটি শান্তিপ্রিয় ও সহযোগিতামূলক প্রজন্ম তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছি।
শিক্ষাক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়। এই তালিকায় সেরা দশে আছেন হানান।
বিজয়ী হলে তিনি পাবেন ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮ কোটি টাকা। মার্চে এই পুরস্কার দেয়া হবে। পশ্চিমতীর ও গাজায় প্রায় ৪৪,০০০ শিক্ষক রয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
হানান বলেন, ২০০০ সালে আল-আকসা মসজিদ কেন্দ্রিক ইন্তিফাদার (বিদ্রোহ) সময় পশ্চিমতীরে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী।
স্মৃতিচারণ করে হানান বলেন, আমার স্বামী (প্রথমে) আহত হন। ইসরাইলি সেনারা তাকে বিদ্রুপ করে এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এতে আমার সন্তানরা ভীষণ কষ্ট পায়।
তিনি বলেন, তার উদ্ভাবিত শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে তার সন্তানরা আবার সুস্থ হয়ে ওঠে এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়।
তিনি আশা করেন, তার শিক্ষা পদ্ধতি এবার পুরস্কার জিততে সক্ষম হবে। তিনি জয়ী হলে তা হবে পুরো ফিলিস্তিনি জাতির জয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস