আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন বিমানবাহী রণতরী বহর দেশটির প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব হারাতে বসেছে এবং এ বহর হামলার প্রচণ্ড হুমকির মুখে পড়ছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতিতে চীন, রাশিয়াসহ অন্য অনেক দেশ সহজেই এ সব রণতরীর ওপর সহজেই হামলা চালাতে পারবে। সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিক্যুরিটির ‘দ্যা রেড অ্যালার্ট, গ্রোয়িং থ্রেট টু ইউ.এস. এয়ারক্রাফট ক্যারিয়াস’ নামের সমীক্ষা-প্রতিবেদনে এ সব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। রেডিও তেহরানের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
এতে বলা হয়েছে, আমেরিকা এখনো রণতরী ব্যবহারের মতো মান্ধাতার আমলের কৌশলে আটকে আছে। অথচ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে এককালে দুর্জেয় হিসেবে বিবেচিত মার্কিন রণতরী বিরুদ্ধে এখন সহজেই হামলা চালানো হতে পারে। প্রযুক্তির উন্নয়নে এ ক্ষেত্রে মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের জন্য ‘দ্রুত অগ্রসরমান হুমকি’ হয়ে দেখা দিয়েছে চীন।
মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে, ‘এরিয়া ডিনাইল’ নামের পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে যুদ্ধ এলাকায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। ফলে কার্যকর ভাবে লড়াইয়ের জন্য মার্কিন বিমানবাহী জাহাজগুলো যুদ্ধ এলাকার কাছে ঘেঁষতে পারে না। অথবা পারলেও এ জন্য দিতে হবে চড়ামুল্য। এ কাজ করতে যেয়ে রণতরী ও তার বিমানগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এমনকি ধ্বংসের মুখে পড়তে হবে।
‘এরিয়া ডিনাইল’এর জন্য নতুন বিমান, ড্রোন প্রযুক্তি, ডুবোজাহাজ এবং এমনকি বিমানবাহী রণতরী বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হতে পারে। এখানে উল্লেখ্য গত মাসে ইরানের ড্রোন নির্বিবাদে মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ হেরি এস ট্রুম্যানের ওপর দিয়ে উড়ে ছবি ও ভিডিও তুলে এনেছিল।
এদিকে, চীন দ্রুত গতিতে মার্কিন নৌবহরের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশটির হাতে বর্তমানে বিমানবাহী রণতরী বিধ্বংসী দু’রকমের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এগুলো হলো ডিএফ২১ডি, ডিএফ-২৬। চীনের উপকূল থেকে গুয়াম দ্বীপের উপকুলের মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা সম্ভব হবে এ দিয়ে। চীনের উপকূল থেকে দ্বীপটি প্রায় ২০০০ মাইল দূরে অবস্থিত।
এ ছাড়া বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরের কৃত্রিম দ্বীপে এইচকিউ-৯ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে বেইজিং। ফলে এটি মার্কিন বিমানবাহী জাহাজের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। তুলনামূলক ভাবে তাদেরকে এখন অনেক কাছাকাছি থেকে রণক্ষেত্র মোকাবেলা করতে হতে পারে। দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র দিয়ে হামলার বদলে এখন ক্ষুদ্রপাল্লার অস্ত্রের ঘন ঘন হামলার মুখে পড়তে হতে পারে তাদের।
প্রতিবেদনে আমেরিকার জন্য হুমকি হিসেবে রাশিয়ার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। গত নভেম্বরে রাশিয়া উচ্চ প্রযুক্তির এসএ-২১ ‘গ্রোলার’ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে সিরিয়ায়। শুধু সিরিয়া নয় বরং পূর্ব ভূমধ্যসাগরের বেশির ভাগ এলাকায় এ দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে হামলা চালাতে পারবে রাশিয়া।
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই