বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫, ০৯:৪৮:২৬

বোমা হামলা কার্গো বিমান অবতরণের পরপরই!

বোমা হামলা কার্গো বিমান অবতরণের পরপরই!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুদানের দারফুর অঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত বিমানবন্দরে বুধবার একটি কার্গো বিমান অবতরণের পরপরই বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

দক্ষিণ দারফুর রাজ্যের রাজধানী নিয়ালার বিমানবন্দরটি কয়েক সপ্তাহ ধরে সুদানের সেনাবাহিনীর একাধিক বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান যুদ্ধে এ হামলা একটি নতুন ধাপ।

সুদানের কার্যত শাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী ও তার সাবেক উপপ্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলোর নেতৃত্বাধীন আরএসএফ—দুই পক্ষই সর্বশেষ হামলা সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।

বিমানবন্দরের পাশে বাস করা একজন প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৫টায় আমি একটি কার্গো বিমান রানওয়েতে অবতরণ করতে দেখি। এর আধাঘণ্টা পর আমি বিস্ফোরণের শব্দ শুনি ও ধোঁয়া উঠতে দেখি।’

এই বক্তব্য আরো দুজন প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া শহরের আরো অনেক বাসিন্দা জানান, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নিয়ালার বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তারা সবাই নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপির সঙ্গে কথা বলেন। কারণ ২০২৩ সাল থেকে নিয়ালায় আরএসএফের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর বেসামরিক জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চলছে।

গত মাসের শুরুতেও একটি কার্গো বিমানে বোমা হামলা চালানো হয়, যেটি আরএসএফের সেনাঘাঁটির জন্য সরঞ্জাম সরবরাহ করতে নিয়ালার বিমানবন্দরে অবতরণ করছিল বলে ধারণা করা হয়।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বুধবার জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেনাবাহিনীর ‘বাছবিচারহীন’ বিমান হামলায় শহরটিতে বহু মানুষ নিহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে সেনাবাহিনী যখন সারা দেশে পুনর্দখলের জন্য জোরালো পাল্টা আক্রমণ চালায়, তখন তারা নিয়ালার আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় ‘বিমান থেকে অনির্দেশিত বোমা ফেলেছিল’ বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখের এক হামলায় পাঁচটি বোমা শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পড়লে ৩২ জন নিহত হয় বলে জানায় আন্তর্জাতিক মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস।

২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, ১.৩ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বিশ্বে সবচেয়ে বড় ক্ষুধা ও বাস্তুচ্যুতি সংকট সৃষ্টি করেছে। এ যুদ্ধ কার্যত সুদানকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে—সেনাবাহিনী মধ্য, উত্তর ও পূর্ব অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে; অন্যদিকে আরএসএফ প্রায় পুরো দারফুর ও তাদের মিত্রদের সহযোগিতায় দক্ষিণের কিছু অংশ দখলে রেখেছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে