রবিবার, ০৮ জুন, ২০২৫, ০২:০৫:১৭

কী ঘটছে লস অ্যাঞ্জেলসে? যা জানা গেল

কী ঘটছে লস অ্যাঞ্জেলসে? যা জানা গেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লস অ্যাঞ্জেলসে অভিবাসীদের বিক্ষোভ মোকাবিলায় শনিবার ২০০০ সেনা মোতায়েন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ পদক্ষেপকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও  উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, এটি পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে।

লস অ্যাঞ্জেলস থেকে এএফপি রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলসের বিভিন্ন এলাকায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট কর্তৃক অনথিভুক্ত অভিবাসীদের গ্রেফতারের পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। শনিবার তা দ্বিতীয় দিনে গড়ায়।

শনিবার রাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেডারেল এজেন্টরা ক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা ফ্ল্যাশ-ব্যাং গ্রেনেড ছোড়ে এবং অবৈধ অভিবাসীদের ওপর অভিযানের সময় একটি সড়কের কিছু অংশ বন্ধ করে দেয়।

ফক্স-১১ নিউজ আউটলেট জানিয়েছে, প্যারামাউন্টে এই অচলাবস্থার ঘটনা ঘটে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা একটি হোম ডিপোর কাছে জড়ো হয়, যা ফেডারেল অভিবাসন কর্মকর্তারা স্টেজিং এরিয়া হিসাবে ব্যবহার করছিলেন।

সংবাদ প্রতিবেদন ও সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট অনুযায়ী, গ্যাস মাস্ক পরা ফেডারেল এজেন্টরা তাদের মুখোমুখি হন, যারা জনতার ওপর ফ্ল্যাশ-ব্যাং গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।

জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রিপাবলিকান ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ এবং উপস্থিতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।তাদেরকে তিনি ‘দানব’ এবং ‘প্রাণী’ হিসাবে তুলনা করেছেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, শনিবারের দিনের শেষের দিকে, ট্রাম্প ‘অভিযানকে আরও তীব্র করে তোলার জন্য’ ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের একটি স্মারকে সই করেছেন। 

‘অপরাধমূলক আচরণ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে।বিশেষ করে যখন সেই সহিংসতা আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয়।’

হোয়াইট হাউস সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রায় এক ঘণ্টা আগে ক্যালিফোর্নিয়া ডেমোক্রেট দলীয় গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন।

তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছেন, ‘এ পদক্ষেপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বেদনাদায়ক এবং কেবল উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে । ‘আমরা শহর এবং কাউন্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করছি এবং বর্তমানে কোনো অপূরণীয় প্রয়োজন নেই।’

এদিকে লস অ্যাঞ্জেলসের মেয়র কারেন বাস স্বীকার করেছেন, ফেডারেল অভিবাসন প্রয়োগকারী সংস্থার পদক্ষেপের পরে কিছু শহরের বাসিন্দা ‘ভয় অনুভব করছেন’।

তিনি এক্সে বলেছেন, ‘প্রত্যেকেরই শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। তবে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, সহিংসতা এবং ধ্বংসযজ্ঞ অগ্রহণযোগ্য এবং দায়ীদের জবাবদিহি করা হবে’।

এফবিআই-এর উপ-পরিচালক ড্যান বোঙ্গিনো বলেছেন, শুক্রবারের সংঘর্ষের পর একাধিক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি এক্স-এ বলেছেন, ‘আপনি বিশৃঙ্খলা করবেন আর আমরা হাতকড়া পরাবো। আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকবে’।

এদিকে ‘লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস’ জানিয়েছে, শনিবার ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টদের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য স্লোগানের মধ্যে কিছু বিক্ষোভকারী মেক্সিকান পতাকা ওড়ায় এবং অন্যরা মার্কিন পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় সিমেন্টের ব্লক এবং উল্টে ফেলা শপিং কার্টগুলো ব্যবহার করে সড়ক অবরোধ করা হয়।তারা কাছাকাছি একটি ফ্রিওয়ে থেকে বেরিয়ে আসা একটি ইউএস মার্শাল সার্ভিস বাসে হামলা চালায়। কর্তৃপক্ষ পরে বিক্ষোভকারীদের হাইওয়ে দখল করতে এবং নতুন লোকদের প্রবেশ বন্ধ করতে র‌্যাম্প বন্ধ করে দেয়।

হোয়াইট হাউস এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার এগুলোকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল শহর লস অ্যাঞ্জেলস দেশটির অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ মহানগর।

মার্কিন আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, প্যারামাউন্ট শহরতলিতে প্রায় ৫০ হাজার লোক বাস করে। তাদের ৮২ শতাংশই হিস্পানিক বা ল্যাটিনো।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে