সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ১২:২৯:২২

ধোঁয়া ও স্ফুলিঙ্গ হজ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে

ধোঁয়া ও স্ফুলিঙ্গ হজ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২৫০ জন হজযাত্রী নিয়ে জেদ্দা থেকে আসার পর ভারতে ভয়াবহ কারিগরি ত্রুটির মুখে পড়েছে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ।  রোববার ভোরে লখনউর চৌধুরি চরণ সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমানের চাকার অংশে ধোঁয়া এবং আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়, যা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজটি, যার ফ্লাইট নম্বর ছিল এসভি-৩১১২, শনিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে সৌদি আরবের জেদ্দা শহর থেকে রওনা দেয় এবং রোববার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে লখনউতে পৌঁছায়। অবতরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের বাম পাশের চাকার নিচ থেকে ধোঁয়া ও আগুনের ঝলক দেখা যায়, যা যান্ত্রিক সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

বিমানবন্দরের জরুরি সাড়া টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ফেনা ও পানি ব্যবহার করে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আনে।  

পরবর্তী তদন্তে জানা যায়, হঠাৎ করে হাইড্রলিক তরলপদার্থ (হাইড্রলিক ফ্লুইড) লিক করে পড়ে, যা চাকার অ্যাসেম্বলিতে অতিরিক্ত উত্তাপ সৃষ্টি করে এবং এর ফলে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ও ধোঁয়া দেখা যায়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উড্ডয়নের সময় যদি এই ত্রুটি দেখা দিত, তাহলে তা একটি বড় ধরণের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় রূপ নিতে পারত। উক্ত ফ্লাইটটি হাজযাত্রীদের নিয়ে জেদ্দা থেকে লখনউ এসেছিল এবং পরে এটি খালি অবস্থায় সৌদি আরবে ফেরত যাওয়ার কথা ছিল।

এই ঘটনার মাত্র কয়েক দিন আগেই ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ শহরের কাছে একটি মেডিকেল কলেজের অভ্যন্তরে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। ১২ জুন দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে এবং ২৪২ আরোহীর মধ্যে ২৪১ জনসহ মাটিতে থাকা আরও ২৯ জনের মৃত্যু হয়।

রোববারের সৌদি ফ্লাইটে ধোঁয়া ও স্ফুলিঙ্গ দেখা যায় অবতরণের ঠিক পরই, এবং তা বিমানের অবতরণ যন্ত্রাংশ (ল্যান্ডিং গিয়ার) এর নিচে থেকে উঠে আসে। অবতরণের সময় এই যন্ত্রাংশে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তা বিমান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, যা বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করে।

সৌভাগ্যবশত, লখনউ বিমানবন্দরের কর্মীরা অত্যন্ত দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেন। বিমানটি দ্রুত থামিয়ে যাত্রীদের নিরাপদে ও সুশৃঙ্খলভাবে বের করে আনা হয়। কোনো যাত্রী আহত হননি, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে রানওয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় এবং উড়োজাহাজটির পূর্ণাঙ্গ কারিগরি পরিদর্শন শুরু হয়েছে।

সৌদি এয়ারলাইন্স এই ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও কারিগরি নিরীক্ষার ক্ষেত্রে আরও কঠোরতা প্রয়োজন, কারণ এমন ‘ঘনিষ্ঠ অঘটন’ ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

যদিও এই যাত্রায় কেউ হতাহত হননি, তবে ঘটনা ঘন ঘন বিমানে ভ্রমণকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে