শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ০৪:০৭:৩১

যুদ্ধে রাতে হামলার কারণ জানা গেল

যুদ্ধে রাতে হামলার কারণ জানা গেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধে রাতের বেলাতেই হামলা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয় বরং এটি পরিকল্পিত সামরিক কৌশলেরই অংশ, যাতে আক্রমণ চালিয়ে শত্রুপক্ষকে অপ্রস্তুত করা যায় এবং ভয় ধরানো যায়। 

রাতের অন্ধকারে যেমন হামলা চালালে সেটি কিছুটা আড়াল করা যায়, তেমনি এর পেছনে রয়েছে আরও কিছু কারণ। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, কৌশলগত সুবিধা আর মানসিক চাপ তৈরির কৌশল মিলিয়ে রাতকে আক্রমণের উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নেওয়া হয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অন্ধকারের সুবিধা

রাতের অন্ধকার প্রাকৃতিকভাবেই একটি গোপন আবরণ তৈরি করে, যা আক্রমণকারী বাহিনীর জন্য কৌশলগত সুবিধা এনে দেয়। রাডার ও ভিজ্যুয়াল নজরদারি অনেকাংশে দুর্বল হয়ে পড়ে। বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকলেও রাতের লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা তুলনামূলক কঠিন। বাসিন্দারা ঘুমন্ত থাকায় আচমকায় বিস্ফোরণ বা বিকট শব্দে ‍মানুষজন ভীতি ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

শত্রু পক্ষ প্রস্তুত থাকে না

মধ্যরাতে হামলা চালালে প্রতিপক্ষ সেনা ইউনিট সাজানো-গোছানো রেসপন্স দিতে পারে না। এই ভয়কে ব্যবহার করেই অনেক সময় রাজনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায় করা হয় বা নিজেদের প্রতিশোধ ‘দৃশ্যমান’ করা হয়।

আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত দেশগুলো রাতের লড়াইয়ে অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান এমনকি সৌদি আরব প্রযুক্তিতে অনেকটাই সক্ষম। ফলে তারা রাতে ঝুঁকি না নিয়ে আক্রমণ চালাতে পারে কার্যকরভাবে।

নাইট ভিশন গগলস ও থার্মাল সেন্সর: যা শত্রুকে অন্ধকারেও খুঁজে বের করে।
ইলেকট্রনিক জ্যামারের: এটি ব্যবহার করে শত্রুর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলা যায়।
স্যাটেলাইট ও ড্রোন: স্যাটেলাইট ও ড্রোন সার্ভে ইলেন্স যা ২৪/৭ চালু থাকে।

মানসিক প্রভাব

রাতের আক্রমণ মানেই ঘুমন্ত নাগরিকের ওপর ভয় ঢেলে দেওয়া। পরিবার, শিশু, সাধারণ মানুষের মানসিক শান্তি নষ্ট হয়। যুদ্ধের একটা ‘অদৃশ্য চিত্র’ তৈরি হয়। যা আতঙ্কের চেয়েও বেশি গভীর।

দিক ও স্থান গোপন রাখা সহজ

রাতের অন্ধকারে কোন দিক থেকে আক্রমণ হচ্ছে, সেটা বুঝে উঠতে সময় লাগে। এতে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়া বা বিভ্রান্তি ঘটে।

মিডিয়া ও বার্তা

রাতে আক্রমণ মানেই ভোরবেলা ব্রেকিং নিউজ। এই টাইমিং এক ধরনের কূটনৈতিক ও মিডিয়া কৌশল। আক্রমণকারী পক্ষ চাইলে নিজের ভাষ্য আগে প্রচার করতে পারে। ভোরে সংবাদমাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত বিবৃতি দিয়ে যুদ্ধকে ‘ন্যায়সংগত’ বলা যায়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া বুঝে প্রয়োজন হলে আক্রমণ থামিয়েও দেওয়া যায়। ইরান ও ইসরায়েল এই কৌশল বারবার ব্যবহার করেছে গত কয়েক মাসে।

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে