আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে গত রোববার (২২ জুন) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালানোর পর ইসরায়েল ইসলামিক রিপাবলিকের বিরুদ্ধে তাদের বোমা হামলা অভিযান শেষ করার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ইসরায়েলি ও আরব কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
চ্যানেল ১২ এর তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল মনে করে তারা ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ এর মূল সামরিক লক্ষ্য —ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি অপসারণ — আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই অর্জন করতে পারবে।
আরব কর্মকর্তারা দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের আরব মিত্রদের মাধ্যমে ইরানকে এই বার্তা দিতে বলেছে যে, ইসরায়েল শিগগিরই অভিযান শেষ করতে চায়। তবে ওই কর্মকর্তাদের মতে, ইরান এখনও মনে করে যে, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাব দেওয়া তাদের কর্তব্য।
গতকাল টাইমস অফ ইসরায়েলকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, তেহরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগে রাজি হয়, তাহলে ইসরায়েল বোমা হামলা বন্ধ করতে প্রস্তুত।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা ইরানের ওপর নির্ভর করছে, আমাদের ওপর নয়। আমরা এখনই শেষ করতে রাজি; যদি কোনো চুক্তি হয়, তাহলে ইসরায়েল সন্তুষ্ট হবে।’
চ্যানেল ১২ জানায়, এই অভিযান শেষ করার দুটি উপায় রয়েছে—
১. ইসরায়েল একতরফাভাবে ঘোষণা করতে পারে যে তারা যুদ্ধের লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে এবং ইরানও তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করবে।
২. যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করতে পারে যে দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে —তবে এই বিকল্পটিকে ইসরায়েল কম পছন্দ করছে।
যদি ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ না করে, তাহলে ইসরায়েল হামলা আরও তীব্র করবে এবং সরকারের ভিত্তি দুর্বল করার দিকে মনোযোগ দেবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ওয়াল্লা নিউজ। আজ তেহরানের কেন্দ্রস্থলে ইরানি শাসন ব্যবস্থার উপর হামলা এই বার্তাই দিচ্ছে— যদি ইরান থামতে রাজি না হয়, তাহলে আরও বড় হামলা আসছে।
নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে ইসরায়লি গণমাধ্যম ওয়াল্লা জানিয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই সংঘাত বন্ধে প্রধান বাধা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, তারা আশা করছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি যৌথ হামলার ফলে ইরান আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরে আসবে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে রাজি হবে। তবে, যদি ইসরায়েল দেখতে পায় যে তেহরান পারমাণবিক কর্মসূচি পুনর্গঠন করতে চাইছে, তাহলে তারা আবারও বিমান বাহিনী দিয়ে হামলা চালাবে।
এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের লক্ষ্য অর্জনের খুব কাছাকাছি তারা পৌঁছে গেছে। তিনি জানান, তারা ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করেছে।
নেতানিয়াহু প্রতিশ্রুতি দেন, ইসরায়েলকে দীর্ঘস্থায়ী ‘অপক্ষয় যুদ্ধ’ এর মধ্যে টেনে আনা হবে না। তবে এটির মানে এই নয় যে যুদ্ধের সব লক্ষ্য পূরণের আগে তিনি অভিযান থামিয়ে দেবেন।