আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাতারে মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দরপতন হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়লেও এ ধরনের পতন বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য স্বস্তির। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, তাৎক্ষণিকভাবে জ্বালানি সরবরাহে বড় কোনো বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনাও বর্তমানে নেই।
দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডাব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম সোমবার (২৩ জুন) এক লাফে ৭ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৮.৫১ ডলারে দাঁড়ায়। এই দরপতনের মূল কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে কাতারের আল উদেইদ মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে। যদিও মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ একে প্রতীকী আখ্যা দিয়েছে এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলার প্রতিক্রিয়াতেই ইরান পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।
হরমুজ প্রণালি বন্ধের জন্য ইরানি পার্লামেন্টে ভোট পাস হলেও, বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সামুদ্রিক রুট এখনো সচল রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এবং বিপুল পরিমাণ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস এই প্রণালি দিয়ে সরবরাহ হয় বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান এখনই হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার মতো চরম পদক্ষেপ নেবে না। কেপলারের বিশ্লেষক ম্যাট স্মিথ বলেন, ‘এটা এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ইরান তুলনামূলকভাবে কম সংঘাতময় পথ বেছে নিচ্ছে। হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।’
তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলেও বিশ্ব শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক দেখা যায়নি। নিউইয়র্কের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে ০.৬ শতাংশ এবং ডাও জোন্স বেড়েছে ০.৫ শতাংশ। অন্যদিকে লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক কমেছে ০.২ শতাংশ এবং টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক কমেছে ০.১ শতাংশ।
অ্যাগেইন ক্যাপিটালের অংশীদার জন কিলডাফ জানান, ‘এই মুহূর্তে ইরানের লক্ষ্য তেল সরবরাহ নয়। বরং তাদের নজর মার্কিন ঘাঁটি বা ইসরায়েলের বেসামরিক অবকাঠামোর দিকে।’
অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রধান বিশ্লেষক জন ক্যানাভান বলেন, ‘বছরের শুরু থেকেই ভূরাজনৈতিক নানা অনিশ্চয়তা বাজারকে রীতিমতো ক্লান্ত করে তুলেছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন আর সহজে ভীত হয়ে পড়ছেন না।’