এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : যুদ্ধ থেমেছে। তেল আবিবের রামাতআবিবে ধ্বংস হওয়া ঘর-বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। খুঁজে ফিরছেন টুকরো স্মৃতি, ছবি, বই কিংবা আস্ত সোফা। ধ্বংসাবশেষ সরাতে ব্যস্ত উদ্ধারকর্মীরা। তবে যুদ্ধ থামলেও সবার চোখে-মুখে ভয়ের রেখা স্পষ্ট-বাতাসে গুনগুন করছে একটাই প্রশ্ন: আদৌও থামবে তো এই যুদ্ধ? দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তছনছ হয়ে গেছে তেল আবিবের শহর রামাতআবিব। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে এখনো। ‘মনে হচ্ছে এই দিনটা যেন শেষ হচ্ছে না, একটানা চলছেই, বলছিলেন তেল আবিবের একটি বিনোদন সংস্থার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা লিয়াত।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। আবার আনন্দ করতে চাই।’ বাসিন্দা ইলানা বেন আরি বলছিলেন, ‘প্রথম মুহূর্তে তো বোঝাই যায় নি কী হয়েছে। বড় ধাক্কাটা পরে আসে। আমরা ভেবেছিলাম, আর কখনো আমাদের বাড়িতে ফিরতে পারব না।’
রোববার ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের ১০টি স্থানে আঘাত হানে। যার মধ্যে রামাতআবিব অন্যতম। এটিই ছিল এ পর্যন্ত ইরানের সবচেয়ে তীব্র হামলা। এতে ২৩ জন আহত হন। এর আগে শনিবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং দাবি করে, এতে ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সেদিন রাতে বলেছেন, ‘আমরা লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত থামব না। আবার এই অভিযান দীর্ঘ করে যুদ্ধে পরিণত করতেও চাই না। এটি এক ঐতিহাসিক অভিযান। যা আমাদের সব লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত চলবে।’
১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল ইরানে ইসরাইলের শত শত বিমান হামলার মধ্য দিয়ে। এর জবাবে ইরানও শুরু করে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। যা দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। সোমবার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
মার্কিন হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক ও কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এরপর পরই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১২ দিনের টানা ইরানি হামলায় ইসরাইলে ২৪ জন নিহত ও কয়েকশ আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে ইসরাইলি হামলায় ইরানে অন্তত ৪৩০ জন নিহত ও ৩ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন। তেহরানসহ ইরানের বহু অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত গত ১০ দিন ধরে রাজধানী তেহরানে চলছে টানা বোমাবর্ষণ।
তেলআবিবে রোববারের হামলার রেশ কাটেনি সোমবারও। দেশটিতে বন্ধ হয়ে গেছে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় বড় শহর।