আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ব-প্রথম জলবায়ু ভিসা চালু করেছে অস্ট্রেলিয়া। এ ভিসাধারীরা দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন। ইতিমধ্যে প্রথমবারের মতো আবেদন গ্রহণ চলছে। সাড়াও মিলেছে ব্যাপক। খবর বিবিসির।
প্রথম দফায় টুভালুর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি নাগরিক বিশ্ব-প্রথম জলবায়ু ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। ভিসাপ্রাপ্তি তাদের অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে অভিবাসনের সুযোগ করে দেবে। এ পর্যায়ে একমাত্র টুভালুর জনগণই এ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১৬ জুন প্রথম আবেদন গ্রহণের জন্য ওয়েবসাইট খোলা হয়। এ বছর ১৮ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এরই মধ্যে নিবন্ধনের প্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে প্রোগ্রামটিতে ব্যাপক আবেদন জমা হবে। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে প্রতি বছর র্যান্ডম পদ্ধতিতে টুভালুর নাগরিকদের মাত্র ২৮০টি ভিসা দেওয়া হবে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র বিভাগ জলবায়ু-সম্পর্কিত স্থানচ্যুতির হুমকির প্রতি একটি যুগান্তকারী প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভিসা প্রোগ্রামটিকে চিহ্নিত করেছে। বলেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র পাঁচ মিটার (১৬ ফুট) ওপরে ক্ষুদ্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-হুমকির দেশগুলোর মধ্যে একটি।
২৭ জুন পর্যন্ত ১,১২৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এ ভিসার মধ্যে পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ফলে সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ৪,০৫২ জন।
২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ১০,৬৪৩ জন লোক বাস করে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্যাসিফিক এনগেজমেন্ট ভিসাধারীদের অস্ট্রেলিয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। ভিসাধারীরা দেশটিতে অবাধে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং দেশের বাইরেও অবাধে ভ্রমণ করতে পারবেন।
ভিসার আওতায় দেশে আগমনের সময় অস্ট্রেলিয়ান সহায়তা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে থাকবে দেশের মেডিকেয়ার সিস্টেমে অ্যাক্সেস, শিশু যত্ন ভর্তুকি এবং অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের মতো একই ভর্তুকিতে স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৃত্তিমূলক সুবিধাগুলোতে পড়াশোনা করার সুযোগ।
আর ভিসার আবেদন খরচও কম। ২০২৫ সালের আবেদনকারীদের ভিসাপ্রাপ্তির পর অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের খরচ ২৫ অস্ট্রেলীয় ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে ঘোষিত অস্ট্রেলিয়া-টুভালু ফ্যালেপিলি ইউনিয়নের অংশ হিসেবে নতুন শ্রেণির ভিসা তৈরি করা হয়। যার মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা এবং সামরিক আগ্রাসন মোকাবিলায় দ্বীপটিকে রক্ষা করার জন্য ক্যানবেরার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
টুভালুর প্রধানমন্ত্রী ফেলেতি তেও গত বছর এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, প্রথমবারের মতো এমন একটি দেশ (অস্ট্রেলিয়া) এসেছে যারা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষতিকারক প্রভাব সত্ত্বেও টুভালুর ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রত্ব এবং সার্বভৌমত্বকে আইনিভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।