সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৯:২০:৫৪

নিজে মরে চারজনের নবজীবন দিয়ে গেলেন তরুণী

নিজে মরে চারজনের নবজীবন দিয়ে গেলেন তরুণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিপদ তো আর বলেকয়ে আসে না।  ২১ ফেব্রুয়ারি বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে ঘুরতে বেরিয়ে মহীশূরের রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন সঞ্জু।  ইরাপ্পার একমাত্র মেয়ে।  অচৈতন্য অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছনোর পর কোনো আশাই ছিল না।  

বিজিএস হাসপাতালের ডাক্তাররা জানিয়ে দিলেন, সঞ্জুর মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে।  এক মুহূর্ত দেরি না করে সিদ্ধান্ত নিলেন, মেয়ের অঙ্গ দান করবেন।  যা সিদ্ধান্ত তাই করলেনও।  নিজে মরে, একসঙ্গে চারজনের নব জীবন দিয়ে গেলেন মহীশূরের এই তরুণী।  তার হার্ট, লিভার, কিডনি ও চোখ দান করেন তিনি।

সঞ্জুর পরিবার ডাক্তারদের জানান, হরিশ নানজাপ্পাই তাদের অঙ্গদানে উদ্ধুদ্ধ করে গেছেন।  সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর রাস্তায় গাড়ি চাপা দেয় হরিশকে।  ভারী চাকার চাপে দু'ফালা হয়ে যায় শরীর।  জানতেন আর বাঁচবেন না।  মৃত্যুর আগে তার একটাই আর্জি ছিল, অঙ্গদান করে যেতে চান।  ক'দিন আগে খবরের কাগজ নানজাপ্পার সেই ট্রাজিক মৃত্যুর খবর পড়েছিলেন ইরাপ্পা।

সঞ্জুর পরিবারের সম্মতি পেয়ে 'জোনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি অফ কর্নাটকা'র সঙ্গে যোগাযোগ করেন ডাক্তাররা।  উটির বাসিন্দা বছর ত্রিশের শিবনের শরীরে সঞ্জুর হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয়।

মহীশূর থেকে উটি ৩৭ কিলোমিটার।  সঞ্জুকে নিয়ে যেতে অ্যাম্বলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়।  গ্রিন করিডর তৈরি করে দ্রুত নিয়ে যেতে চলে আসে পুলিশের জিপও।  কিন্তু ডাক্তার পানেন সিদ্ধান্ত নেন তার গাড়িতে করেই হার্টটি নিয়ে যাবেন।

সেই মতো অস্ত্রোপচার করে হার্টটি বের করে বরফের বাক্সে রাখা হয়।  এর পর গাড়ি উটির পথে রওনা দেয়ার ঠিক আগে একজন এসে পথ আগলে দাঁড়ান।  মাত্র কয়েক সেকেন্ড দাঁড়ান সেই বরফের বাক্সটির সামনে।  

তিনি সঞ্জুর বাবা।  মেয়েকে শেষবারের মতো স্যালুট করেন তিনি।  এ হৃদয়বিদারক দৃশ্যে চোখের জল বাধ মানেনি কারো।  নিজে কাঁদলেন, সবাইকে কাঁদালেন তিনি।
২৯ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে