আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিম তীরে একটি সামরিক ঘাঁটির বাইরে রবিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা সামরিক যান ও একটি নিরাপত্তা স্থাপনায় ভাঙচুর করে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের তথ্য মতে, পশ্চিম তীরের মধ্যাঞ্চলে বিনইয়ামিন আঞ্চলিক ব্রিগেড ঘাঁটির কমান্ডারকে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং তাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে কটূক্তি করা হয়।
সেনাবাহিনী জানায়, ‘রবিবার সন্ধ্যায় ব্রিগেড ঘাঁটির প্রবেশদ্বারে বহু ইসরায়েলি নাগরিক জড়ো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। কিছু বেসামরিক ব্যক্তি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়, তাদের ওপর মরিচের স্প্রে ছুড়ে সামরিক যানবাহনে ভাঙচুর চালায়।’
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষীরা উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
এই সংঘাতে এক ইসরায়েলি নাগরিক আহত হয়। কয়েক ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী আরেকটি বিবৃতিতে জানায়, ‘ইসরায়েলি বেসামরিক লোকজন একটি নিরাপত্তা স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এবং তা ধ্বংস করে দিয়েছে। এই স্থাপনায় সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে সহায়ক কিছু প্রযুক্তি ছিল।’ এই ঘটনায় জোট সরকারের বিভিন্ন নেতা নিন্দা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, আইনের শাসনে বিশ্বাসী কোনো দেশই সামরিক স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা সহ্য করতে পারে না। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনায় দ্রুত তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সোমবার একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন, যেখানে দেশের সব নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সেনাদের অবদানের প্রশংসা করে বলেন, ‘সরকার কোনো সহিংস উগ্র গোষ্ঠীকে আমাদের সেনাদের ক্ষতি করার সুযোগ দেবে না।’
এ ছাড়া ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ঘটনাটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানালেও পশ্চিম তীরের বসতিগুলোর প্রশংসা করেন।
তিনি লেখেন, ‘এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়...এবং যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
এর আগে শুক্রবার রাতে সেনারা ওই ঘাঁটির কাছে ফিলিস্তিনি গ্রাম কাফর মালিকের পাশে একটি বন্ধ ঘোষিত সামরিক এলাকায় বসতিদের প্রবেশ ঠেকাতে গেলে তারা ওই কর্মকর্তা ও সেনাদের ওপর হামলা চালায়। সেই গ্রামে বসতিদের হামলায় অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। সেই ঘটনায় ছয় ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ও তাদের কার্যত দায়মুক্তির সংস্কৃতির সমালোচনা করেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে।