আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুহূর্তেই যুদ্ধের চালচিত্র বদলে দিতে পারে—এমন এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধবিমান তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। বিমানটির নাম SR-72 Darkstar। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লোকহিড মার্টিন দাবি করছে, এটি হবে ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগামী ও ভয়ংকর ক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক বিমান। শব্দের চেয়ে ছয় গুণ বেশি গতি অর্জনের সক্ষমতা থাকায় এটি প্রতিপক্ষের রাডারে ধরা পড়ার আগেই তাদের আকাশসীমা অতিক্রম করতে পারবে।
‘মার্ক সিক্স’ গতি অর্জনের অর্থ, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪,৬০০ মাইল। জ্বালানি বিবেচনা না করলে, এটি মাত্র ৫ ঘণ্টা ২৭ মিনিটে পুরো পৃথিবী ঘুরে আসতে সক্ষম। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গতিই ‘ডার্কস্টার’-কে শত্রুর জন্য সবচেয়ে আতঙ্কজনক করে তুলছে।
গোপনে নজরদারি ও হামলার জন্য প্রস্তুত
এসআর-৭২ বিমানটি শুধু নজরদারির জন্য নয়, প্রয়োজনে হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে শত্রুপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম। এতে যুক্ত করা হয়েছে স্টেলথ প্রযুক্তি, স্বয়ংক্রিয় সেন্সর সিস্টেম এবং উন্নত যুদ্ধকৌশল পরিচালনার সফটওয়্যার—যা অনেকটা মানুষের সহায়তা ছাড়াই নিজে থেকেই কাজ করতে পারে।
এই বিমানটির প্রোটোটাইপ তৈরি হচ্ছে মূলত চীন ও রাশিয়ার সামরিক আধিপত্যের পাল্টা জবাব হিসেবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের SR-71 ‘Blackbird’ বিমান নজরদারির কাজে ব্যবহৃত হতো। তারই উত্তরসূরি হিসেবে এসআর-৭২ বিমান আসছে আরও দ্রুত, আরও নিখুঁতভাবে।
বিশেষ প্রযুক্তির ইঞ্জিন: ভবিষ্যতের যুদ্ধযান
বিমানটিতে ব্যবহৃত হবে টারবাইন বেসড কম্বাইন সাইকেল (TBCC) ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন নিচু উচ্চতায় সাবসনিক ও ট্রান্সনিক গতিতে চলতে পারে এবং উচ্চতায় পৌঁছে হাইপারসোনিক গতি পায়—যা আগে কোনো সামরিক বিমানে ব্যবহার হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নতুন ইঞ্জিনের ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে শুধু নজরদারি নয়, পুরো কৌশলই বদলে যাবে। শত্রুপক্ষের রাডারে ধরা না পড়ে তাদের সীমায় ঢুকে হামলা চালিয়ে ফিরে আসা হয়ে যাবে অত্যন্ত সহজ।
এখনো টেস্ট ফেইজে, উড্ডয়ন দশকের শুরুতেই
তবে এখনো এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধবিমান পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। লোকহিড মার্টিন আশা করছে, আগামী দশকের শুরুতে ফ্লাইট টেস্ট শুরু করা যাবে। একবার যখন এটি আকাশে উড়বে, তখন বিশ্বযুদ্ধের হিসাব-নিকাশ এক লাফে বদলে যেতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, SR-72 ‘ডার্কস্টার’ শুধু একটি বিমান নয়, বরং ভবিষ্যতের যুদ্ধনীতির প্রতীক। এর দ্রুতগতি, স্টেলথ প্রযুক্তি এবং হাইপারসোনিক আক্রমণ ক্ষমতা একে ইতিহাসের সবচেয়ে আধুনিক ও ভয়ঙ্কর সামরিক অস্ত্রে পরিণত করতে যাচ্ছে।