আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এশিয় ঘাতক প্রজাতির ভিমরুল আতঙ্কে কাঁপছে গোটা ইউরোপ। এটি ব্রিটেনের জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ভিমরুলের ফ্রান্স পার হয়ে ব্রিটেনে হানা দেয়া কেবলমাত্র সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে এটি ব্রিটেনের জন্য মারাত্মক দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
ব্রিটেনের স্থানীয় ভিমরুলের চেয়ে এ প্রজাতির ভিমরুল স্বভাবে অনেক হিংস্র। এ প্রজাতির একটি ভিমরুল শূককীটের খাবার জোটানোর জন্য দিনে ৫০টি পর্যন্ত সাধারণ মৌমাছি হত্যা করতে পারে।
এতে মধু সংগ্রহকারী এবং পরাগায়ণে নিয়োজিত মৌমাছি ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়বে। বেঘোরে মৌমাছি মারা যাওয়ায় মধু উৎপাদন ব্যাহত হবে। আর সঠিক মাত্রায় পরাগায়ণ না হওয়ায় শস্যসহ কৃষিজাত সব পণ্যের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমবে। অর্থাৎ ব্রিটেনের কৃষি ক্ষেত্রে নেমে আসবে মারাত্মক বিপর্যয়। সব মিলিয়ে ব্রিটেনের পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের কাছে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে এশিয় ভিমরুল।
২০০৭ সাল থেকেই নানা কারণে ব্রিটেনের মৌমাছির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে এবং এ পর্যন্ত তা এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। এ সঙ্গে যদি এশিয় ভিমরুল যুক্ত হয় তবে তা দেশটির কৃষি এবং পরিবেশের জন্য হয়ে উঠবে ভয়াবহ দুঃসংবাদ।
আমদানি করা মাটির পাত্রের সঙ্গে করে ১২ বছর আগে এশিয়া ভিমরুলের চাক ঘটনাক্রমে ফ্রান্সে ঢুকে পড়েছিল। এই এক চাক থেকেই এ ভিমরুল প্রজাতি জার্মানি, স্পেন, ইতালি, পর্তুগাল এবং বেলজিয়ামে ছড়িয়ে পড়েছে।
রানী ভিমরুল সাধারণত এপ্রিল মাসে চাক বানায়। ভিমরুলের সংখ্যা ৬ হাজার না হওয়া পর্যন্ত ডিম পাড়ে রানী। চাকের ক্রমবর্ধমান সদস্যদের আহার যোগাতে মৌমাছি শিকার করে ভিমরুল। শক্তিশালী চোয়াল দিয়ে মৌমাছি টুকরা করে নিয়ে চাক সদস্যদের আহারের যোগান দেয় ভিমরুল।
আমদানি করা টবের গাছ, ফল, ফুল বা কাঠের মধ্যে করে ব্রিটেনেও ঢুকতে পারে এশিয় ভিমরুল। ব্রিটেনের ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড কান্ট্রিসাইড লিংক সংস্থার প্রধান ক্যামেলিয়া কেন বলেন, আগ্রাসী বা অনাগ্রাসী ভিনদেশি সব প্রজাতির ক্ষেত্রে সত্য কথাটি এই যে, এগুলো একবার ঢুকে পড়লে তা উচ্ছেদ করা সত্যিই খুব কঠিন। এক্ষেত্রে এশিয় ভিমরুলের মতো আগ্রাসী প্রজাতিকে হঠানো দুঃসাধ্য এবং ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে।
০১ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস