আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের পাঁচটি দ্বীপরাষ্ট্র—অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস এবং সেন্ট লুসিয়া এখন নাগরিকত্ব দিচ্ছে তুলনামূলক সহজ শর্তে। এসব দেশে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করলেই মিলছে নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট। যা দিয়ে ভ্রমণ করা যাবে যুক্তরাজ্য, ইউরোপসহ প্রায় ১৫০টি দেশে একেবারে ভিসামুক্তভাবে।
এই প্রক্রিয়ার আওতায় আগ্রহীরা কমপক্ষে ২ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করলেই পাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট দেশের পাসপোর্ট। বিনিয়োগের বিপরীতে যে নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা শুধু বসবাসের সুযোগ নয়, বরং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের দরজাও খুলে দিচ্ছে।
সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যান্টিগুয়ার একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানের মালিক নাদিয়া ডাইসন জানান, বর্তমানে তার ৭০ শতাংশ ক্রেতাই নাগরিকত্ব পাওয়ার লক্ষ্যেই সম্পদ কিনছেন। তাদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। একইভাবে চাহিদা বেড়েছে ইউক্রেন, তুরস্ক ও চীনের ধনীদের মধ্যেও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা ধনীদের ‘ব্যাকআপ প্ল্যান’ তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করছে। নাগরিকত্ব নিয়ে এসব দেশে স্থায়ী বসবাস শুরু করেছেন অনেকেই। ২০২৪ সালের শেষ চতুর্থাংশে নাগরিকত্ব আবেদন বেড়েছে ১২ শতাংশ, যা পরিস্থিতির প্রতি বৈশ্বিক উদ্বেগেরই প্রতিফলন।
তবে এ ধরনের নাগরিকত্ব বিক্রির নীতিকে ঘিরে রয়েছে তীব্র বিতর্কও। স্থানীয় অনেকেরই অভিযোগ, এই প্রক্রিয়াটি জাতীয় পরিচয়কে পণ্যে রূপান্তর করছে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের বাইরের দেশ সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডিনস এ নীতির কড়া সমালোচনা করে বলেছে, "নাগরিকত্ব কোনো পণ্য হতে পারে না।"
তবে করমুক্ত সুবিধা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ব্যবসায়িক সুযোগের আকর্ষণে এই বিকল্প ব্যবস্থা এখন ধনীদের কাছে দিন দিন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।