বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ০২:১২:৩৫

নিউইয়র্কে ভুল করে ভুল জায়গায় হামলা: আত্মহত্যার আগে চিঠি রেখে গেছেন বন্দুকধারী

নিউইয়র্কে ভুল করে ভুল জায়গায় হামলা: আত্মহত্যার আগে চিঠি রেখে গেছেন বন্দুকধারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউইয়র্ক শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি সুউচ্চ ভবনে গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন এক বন্দুকধারী। মার্কিন জাতীয় ফুটবল লিগ (এনএফএল) ভবনে এই হামলা চালানোর আগে তিনি একটি চিঠি রেখে গিয়েছেন বলে জানানো হয় বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

সোমবার (২৮ জুলাই) নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের এক সংবাদ সম্মেলনের বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রেখে যাওয়া চিঠিতে বন্দুকধারী নিজের মানসিক সমস্যার জন্য এনএফএলকেই দায়ী করেছেন।

নিহত বন্দুকধারীর নাম শন তামুরা (২৭), যিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, তিনি এনএফএলের সদরদপ্তর থাকা ভবনটিতে ঢুকে ভুল এলিভেটর ব্যবহার করে ভবনের অন্য অংশে গিয়ে হামলা চালান।

তামুরা একটি চিঠিতে লিখেছেন, তিনি ‘সিটিই’ (CTE) নামের একটি মস্তিষ্কজনিত রোগে আক্রান্ত, যা মাথায় আঘাত পেলে হতে পারে। মেয়র অ্যাডামস বলেন, এই রোগের কারণেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন তামুরা।

তবে জানা গেছে, তামুরা কখনো এনএফএলে খেলেননি। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হাইস্কুলে পড়াকালীন আমেরিকান ফুটবল খেলতেন তিনি।

এই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন ৩৬ বছর বয়সী দিদারুল ইসলাম নামের এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ সদস্য, যিনি ভবনটিতে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করছিলেন। এছাড়া নিহতদের একজন ছিলেন বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোনের কর্মী ওয়েসলি লিপ্যাটনার। আরও দুজন পুরুষ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এছাড়া এনএফএলের এক কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানান এনএফএল কমিশনার রজার গুডেল।

হামলার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে মেয়র অ্যাডামস সিবিএসকে বলেন, ‘তার কাছে একটি চিঠি পাওয়া গেছে। তাতে লেখা ছিল, তিনি মনে করতেন তিনি সিটিইতে আক্রান্ত, যা সংঘর্ষপূর্ণ খেলায় অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের মাঝে দেখা যায়। আর এই সমস্যার জন্য তিনি এনএফএলকে দায়ী করেছেন।’

তদন্তকারীদের বরাতে বিবিসি জানায়, শন তামুরা লাস ভেগাস থেকে গাড়ি চালিয়ে নিউইয়র্কে আসেন এবং হামলার সময় একটি আধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করেন। প্রথমে তিনি ভবনের লবিতে গুলি চালান, এরপর একটি এলিভেটরে করে উঠে ৩৩ তলায় গিয়েও গুলি চালান।

মেয়র অ্যাডামস জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তামুরা ভুল করে ভবনের মালিক রুডিন ম্যানেজমেন্টের অফিসে গিয়ে গুলি চালান। এরপর তিনি নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন।

এই ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য মিডটাউন ম্যানহাটন এলাকাজুড়ে জনচলাচল ও গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে থাকা বিবিসির একজন সাংবাদিক জানান, তিনি প্রচুর পুলিশ গাড়ি এবং একজন রক্তাক্ত ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে দেখেছেন।

ঘটনার সময় ভবনের বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছিলেন নিকেশা লুইস। তিনি এনবিসি নিউজকে বলেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে আছি।’ তিনি আরও জানান, তিনি একজন আহত ব্যক্তিকে ভবন থেকে দৌঁড়ে বেরিয়ে আসতে দেখেছেন। ঘটনাটিকে তিনি তার জীবনের ‘সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা’ বলে উল্লেখ করেন। সূত্র: বিবিসি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে