আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা–তে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক পদক্ষেপেই বদলে যেতে চলেছে পৃথিবীর ভূরাজনীতির সব হিসেব-নিকেশ। এর প্রতিক্রিয়া এতটাই ব্যাপক যে দুই শত্রু চীন এবং ভারত সব ভুলে এক হয়ে যেতে পারে। আর তাদের সাথে আছে ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া।
ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি ও প্রকাশ্যে ক্ষোভের পরপরই চীনে উড়াল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তার আগে অবশ্য শীর্ষ দুই নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র কর্মকর্তাকে রাশিয়া পাঠাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ওয়াশিংটনের চাপে ভারসাম্য রক্ষায় নয়াদিল্লির কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তনের স্পষ্ট ইঙ্গিত বলছেন বিশ্লেষকরা।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর চীনের তিয়ানজিন শহরে পর্দা উঠবে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনের। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চীন সফরে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। গালোয়ান উপত্যকায় চীন-ভারত সেনা সংঘর্ষের পর এটি মোদির প্রথম চীন সফর। যদিও ২০২৪ সালের অক্টোবরে ব্রিক্স সম্মেলনে রাশিয়ার কান শহরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন তিনি।
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের এই উদ্যোগটি এমন একসময় নেওয়া হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপোড়েন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের অবনতি হতেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকরকে রাশিয়া পাঠাচ্ছেন মোদি। সফরটি পূর্বনির্ধারিত হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এর তাৎপর্য অনেক বেড়ে গেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দোভালের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরাসরি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের আলোচনার প্রধান বিষয় হতে পারে:
রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, বর্তমান জরুরি ভূরাজনৈতিক ইস্যু ও জ্বালানি সরবরাহ দোভালের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।
বুধবার ভারতকে হুশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি ভারত সরকার বর্তমানে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রুশ ফেডারেশন থেকে তেল আমদানি করছে। ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর অ্যাড ভ্যালোরেম শুল্ক আরোপ করা প্রয়োজন।”
দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে এই ক্ষুব্ধ মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন করে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে গত ৩০ জুলাই ভারতকে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, “রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা অব্যাহত রাখায় ভারতের উপর জরিমানা হিসেবে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।”