বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭:২২

বাংলাদেশ-নেপালের পর এবার জেন জি ঝড় শুরু ভারতেও, বিজেপির কার্যালয়ে আগুন!

বাংলাদেশ-নেপালের পর এবার জেন জি ঝড় শুরু ভারতেও, বিজেপির কার্যালয়ে আগুন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশ-নেপালের পর এবার জেন জি ঝড় বইতে শুরু করেছে ভারতেও। চীন সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চল লাদাখে ফুঁসে ওঠা এ বিক্ষোভ ভয়াবহ রক্তপাতের জন্ম দিয়েছে ইতোমধ্যে। 

সাংবিধানিক সুরক্ষা ও রাজ্য মর্যাদার দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত চারজনের প্রাণ গেছে। এরই মধ্যে সহিংস হয়ে ওঠা এই আন্দোলনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপির কার্যালয়েও। 

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, হিমালয়ের উচ্চভূমির শীতল মরুভূমি অঞ্চল লাদাখে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবারই দেখা দিয়েছে ভারত-চীন উত্তেজনা। আর সেখানেই জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে ভয়াবহ বিক্ষোভ শুরু হয় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির আঞ্চলিক কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ তরুণরা।

লাদাখের আঞ্চলিক রাজধানী লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। এতে এখন পর্যন্ত চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে; সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনীরও বহু সদস্য আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, রাজ্য মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে বিগত ছয় বছর ধরে স্থানীয় সিভিল সংগঠনের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা, অনশন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন লাদাখের মানুষ। কিন্তু, বুধবার শান্তিপূর্ণ সেই আন্দোলন ভেঙে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে বিক্ষুব্ধ তরুণরা।

অতীতে বহু অনশন কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়েছেন শিক্ষক সোনাম ওয়াংচুক। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, এটা তরুণদের এক ধরনের বিস্ফোরণ— একটা জেন-জি বিপ্লব। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আর কাজে আসছে না বলে বিশ্বাস জন্মেছে তাদের মধ্যে।

লাদাখে শুরু এই আন্দোলনকে বাংলাদেশ-নেপালসহ সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় ঘটে যাওয়া বিপ্লবগুলোর সঙ্গে তুলনা করছেন তিনি।

যেভাবে রক্তক্ষয়ী রূপ নিল লাদাখের ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলন 

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে লাদাখ এপেক্স বডির নেতৃত্বে ১৫তম দিনে প্রবেশ করে স্থানীয় আন্দোলনকারীদের অনশন। আগের রাতে দুই প্রবীণ অনশনকারীকে হাসপাতালে নিতে হয়। এরপরই সংগঠকেরা লকডাউনের ডাক দেন। একইসঙ্গে মোদি সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনায় বিলম্ব হওয়ার কারণে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।

এ পরিস্থিতিতে আন্দোলনের কেন্দ্র মার্টিয়ার্স মেমোরিয়াল পার্ক থেকে বেরিয়ে স্থানীয় সরকারি ভবন ও বিজেপি কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হন তরুণরা এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এতে চারজন নিহত, আরও অনেকে আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।

লাদাখ এপেক্স বডির সমন্বয়ক জিগমাত পালজোর বলেন, এটা লাদাখের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। যারা রাস্তায় দাবি আদায়ে নেমেছিলেন, তাদের হত্যা করা হলো।

অন্যদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অশান্ত তরুণদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩০ জনেরও বেশি পুলিশ আহত হয়েছে। আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।    

মোদি সরকারের অভিযোগ, ওয়াংচুক বিক্ষোভকারীদের উসকে দিয়েছেন। তিনি আরব বসন্তধর্মী আন্দোলন ও নেপালের জেন-জি বিক্ষোভের উল্লেখ করে তরুণদের বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 

তবে, ওয়াংচুক জোর দিয়ে বলছেন, তিনি কখনোই সহিংসতার আহ্বান জানাননি; বরং সতর্ক করেছিলেন যে দাবিগুলো উপেক্ষা করলে তরুণদের ক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে