আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অনেকের কাছেই যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) যেনো সোনার হরিণ। ভাগ্য বদলের অন্যতম অনুসঙ্গও। তাই এই লটারি পাওয়ার আকাঙ্খা করেন কেউ কেউ। প্রত্যেক বছর সবমিলিয়ে ৫৫ হাজার মানুষ এই ভিসার সুবিধা ভোগ করেন।
২০২৬ সালের ডিভি লটারির জন্য আবেদন উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে মার্কিন সরকার। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, গতবছরের ন্যায় এবারও ডিভি লটারিতে বাংলাদেশের নাম নেই। অর্থাৎ বাংলাদেশিরা এই লটারির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
শুধু কি তাই? ২০১২ সাল থেকে ডিভি লটারির তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। কেননা, ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এই ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে ওই বছরই দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসনের কোটা পূর্ণ হয়েছিল।
বাংলাদেশ কেন ডিভি লটারি থেকে বাদ পড়ল?
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ‘ডাইভারসিটি ভিসা-ডাইভারসিটি অভিবাসী ভিসা জালিয়াতদের সম্পর্কে সচেতন হোন। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ আর ডাইভারসিটি ভিসা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার যোগ্য নয়।’
ওয়েবসাইটটিতে আরও বলা হয়, ‘২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এই ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছে বলে বাংলাদেশ এই যোগ্যতা হারিয়েছে। কারণ ডিভি কর্মসূচি সেই দেশগুলোর জন্য যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের হার তুলনামূলকভাবে কম।’
বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রতারণা থেকে বাঁচতে সতর্ক করে মার্কিন দূতাবাস আরও জানায়, ‘ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নাগরিক ও অধিবাসীদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার আবেদনের জন্য ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার কথা আবার মনে করিয়ে দেয়। ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস নিয়মিতভাবে ভিসা যোগাড় করে দেওয়া বিষয়ক প্রতারণামূলক সহায়তার প্রস্তাব, ই-মেইল, চিঠি, ওয়েবসাইট, ফোন কল, এসএমএস এবং পত্রিকায় ছাপা বিজ্ঞাপনের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে যুক্ত নয় এবং এমন কোন সেবা দেওয়ার জন্য দূতাবাস তাদের অনুমোদন, সনদ বা অনুমতি দেয়নি। প্রতারণার শিকার হবেন না।’
যেসব দেশের ভাগ্যে নেই ডিভি লটারি
এদিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, আরও বেশ কয়েকটি দেশের ভাগ্যে নেই ডিভি লটারি। দেশগুলো হলো, ভারত, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোও। যুক্তরাষ্ট্রে এসব দেশ থেকে অভিবাসনের হার বেশি হওয়ায় তারা এবার আবেদন প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
যেসব দেশের নাগরিকরা ডিভি লটারির জন্য আবেদন করতে পারবেন
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, এশিয়ার ৩১টি দেশ ও অঞ্চল ২০২৬ সালের ডিভি লটারিতে আবেদন করতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, বাহরাইন, ভুটান, ব্রুনাই, বার্মা (মিয়ানমার), কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইসরায়েল, জাপান, জর্ডান, কুয়েত, লাওস, লেবানন, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, উত্তর কোরিয়া, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, পূর্ব তিমুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইয়েমেন।
ডিভি লটারি কী?
ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) লটারি হলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি অভিবাসন কর্মসূচি, যার মাধ্যমে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে স্থায়ীভাবে দেশটিতে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়। যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম তারাই এতে অংশ নিতে পারে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত ব্যক্তিরা ‘গ্রিন কার্ড’ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী নাগরিকত্ব পান।