আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুদানের উত্তর করদোফানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক স্থানীয় কর্মকর্তা। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
স্থানীয় ওই কর্মকর্তা সোমবার (৩ নভেম্বর) আল জাজিরাকে জানান, প্রাদেশিক রাজধানী আল-ওবেইদের পূর্বাঞ্চলীয় আল-লুয়াইব গ্রামে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
প্রাদেশিক সরকার জানায়, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত তাঁবুকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল। একে বেসামরিক মানুষের ওপর আরএসএফের অপরাধের নতুন সংযোজন হিসেবে উল্লেখ করে সরকার জানায়, নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের একটি বড় অংশও এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
এমন অবস্থায় আরএসএফকে অবিলম্বে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করতে সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, আরএসএফ নিরস্ত্র বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে জাতিগত ও বর্ণগতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপরাধ করে চলেছে।
আরএসএফ সম্প্রতি ঘোষণা করেছিল, তারা শিগগিরই আল-ওবেইদ শহরে হামলা চালাবে। একইসঙ্গে স্থানীয়দের নিরাপদ করিডোর ব্যবহার করে শহর ত্যাগ করতেও বলেছিল তারা।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, গত অক্টোবরের শেষ দিক থেকে উত্তর ও দক্ষিণ করদোফান থেকে নিরাপত্তাহীনতার কারণে অন্তত ৩৮ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে চলমান যুদ্ধে আরএসএফ সম্প্রতি উত্তর করদোফানের বারা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে তারা বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ উত্তর দারফুর প্রদেশের রাজধানী আল-ফাশের শহর দখল করে। পরে সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্কের দাবি, শহরটি দখলের পর থেকে আরএসএফ অন্তত ১,৫০০ জনকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে অন্তত ৪৬০ জনকে একটি হাসপাতালে হত্যা করা হয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদানের সেনাবাহিনী (এসএএফ) ও আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতা দখল নিয়ে সংঘাত শুরু হয়, যা পরিণত হয় পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধে। জাতিসংঘ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং দেড় কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
দুর্ভোগের মাত্রা এতটাই বিস্তৃত যে জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলের বেশ কয়েকটি মধ্যস্থতা সংঘাত শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছে।