আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আবারও উন্মুক্ত হয়েছে ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা। হাজারো প্রবাসী এখন স্বজনদের কুয়েতে আনতে পারছেন সহজ ও দ্রুততম প্রক্রিয়ায়। আগের ৩০ দিনের পরিবর্তে ভিজিট ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০ দিন।
নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আবেদনকারীর তথ্য আপলোড করার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় যাচাইকরণ, আর যাচাইকরণ সম্পন্ন হলেই মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ই-মেইলে পৌঁছে যাচ্ছে ই-ভিসা। মানবিক এ সিদ্ধান্তে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন কুয়েত প্রবাসীরা। এছাড়া শিথিল হয়েছে আয়ের শর্ত, এসেছে পরিবারকে ভ্রমণ করানোর সুযোগও।
বেতন-শর্ত শিথিল হওয়ায় অনেক প্রবাসী এখন স্ত্রী সন্তানসহ অন্যান্য নিকটাত্মীয়কে কুয়েতে আনতে পারছেন। নতুন ভিসা প্ল্যাটফর্মে চারটি ক্যাটাগরিতে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সেগুলো হলো- ট্যুরিস্ট, ফ্যামিলি ভিজিট, বিজনেস এবং গভর্নমেন্ট ভিসা।
ফ্যামিলি ভিজিট ভিসায় এখন শুধু স্ত্রী-সন্তান নয়, চার ডিগ্রি পর্যন্ত আত্মীয়, যেমন খালা-কাকা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নাতি-নাতনি, শ্বশুর-শাশুড়ি, এমনকি ছেলে বা মেয়ের স্ত্রী/স্বামী আনার সুযোগ রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে জন্মসনদই যথেষ্ট, তবে সম্পর্ক নিশ্চিত করতে কিছু আবেদনকারীর জন্য বিবাহ সনদ লাগতে পারে। এসব ক্ষেত্রে, সব নথি অবশ্যই আরবিতে জমা দিতে হবে, অন্য ভাষার নথি অনুমোদিত অফিস থেকে আরবিতে অনুবাদ করতে হবে।
জিসিসি দেশগুলোর বাসিন্দা বহু পেশাজীবী কুয়েতভিসা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইনে বা আগমনের সময় সহজেই পর্যটন ভিসা পেতে পারবেন। এ তালিকায় রয়েছে কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কূটনীতিক, বিচারক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গোল্ডেন ভিসাধারী, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, হিসাবরক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, পাইলট, মিডিয়া কর্মীসহ অসংখ্য পেশার মানুষ।
অনুমোদিত পেশাগুলো আবেদন করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই হয়ে যায়। পাশাপাশি আবেদনকারীদের কুয়েতে নিজস্ব ঠিকানা বা আমন্ত্রণকারীর ঠিকানা প্রদান বাধ্যতামূলক। ইসরাইলের নাগরিক ছাড়া সব দেশের নাগরিকই এই সুবিধা পাবেন।
তবে ভিজিট ভিসায় কাজ করা, অথবা ভিসা রূপান্তরের চেষ্টা করা সম্পূর্ণ অবৈধ। আইন লঙ্ঘন করলে ভিজিটরকে নির্বাসন এবং স্পন্সরকেও কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে। ফ্যামিলি ভিজিট ভিসায় সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত অবস্থানের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া এক বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিজিট ভিসা চালু হয়েছে, তবে প্রতিবার প্রবেশের পর সর্বোচ্চ এক মাস অবস্থান করে দেশে ফিরে যেতে হবে।
কুয়েতে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা তিন লাখেরও বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুযোগের অপব্যবহার হলে আবারও বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য ভিসা সুবিধা। তাই ভিজিট ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্বজনদের দেশে ফেরত পাঠানো বাধ্যতামূলক।