আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডা সরকার দেশজুড়ে চলমান চিকিৎসক–সংকট মোকাবিলায় নতুন করে ৫ হাজার বিদেশি চিকিৎসককে দ্রুত স্থায়ী বাসিন্দা (পিআর) করার ঘোষণা দিয়েছে। গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী লিনা ডায়াব এ উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘এই চিকিৎসকদের অনেকেই ইতিমধ্যে আমাদের কমিউনিটিতে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। আমরা তাঁদের হারানোর সামর্থ্য রাখি না।’
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সাল থেকে চিকিৎসকদের জন্য এক্সপ্রেস এন্ট্রির একটি বিশেষ ক্যাটাগরি চালু করা হবে। যেসব চিকিৎসকের—
গত তিন বছরে অন্তত এক বছরের কানাডায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, বর্তমানে একটি বৈধ চাকরির প্রস্তাব আছে, এবং প্রাদেশিক বা টেরিটোরিয়াল কর্তৃপক্ষ যাদের মনোনয়ন দেবে, শুধু তাঁরাই এই দ্রুতগতির পিআর–প্রক্রিয়ার আওতায় আসবেন।
মনোনীত চিকিৎসকদের কাজের অনুমতি মাত্র ১৪ দিনে প্রক্রিয়াকরণ করা হবে, যাতে তাঁরা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অপেক্ষায় থেকেও কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কানাডায় প্রায় ১৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১১ শতাংশ শিশু-কিশোর নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবার আওতার বাইরে থাকায় চিকিৎসক–সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই পটভূমিতে চিকিৎসকদের প্রধানত পারিবারিক চিকিৎসা, সার্জারি, ক্লিনিক্যাল ও ল্যাবরেটরি মেডিসিনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ বা অন্য দেশ থেকে সরাসরি আবেদন সম্ভব?
কানাডা যখন ইমিগ্রেশনের এক একটি আপডেট দেয়, তখন তার সঙ্গে সত্য-মিথ্যা জড়িয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রতারণার আশ্রয় নেয়।
বাংলাদেশসহ বিদেশে অবস্থানরত অনেক চিকিৎসক প্রশ্ন তুলেছেন—এই নতুন পাঁচ হাজার চিকিৎসকের ক্যাটাগরিতে কি বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশ থেকে সরাসরি আবেদন করা যাবে?
সরকারের ঘোষণায় স্পষ্ট করা হয়েছে, না। এই বিশেষ ক্যাটাগরি শুধু বর্তমানে কানাডায় কর্মরত বিদেশি চিকিৎসকদের জন্য। তাঁরা সাময়িক বিদেশি কর্মী (temporary foreign worker) হিসেবে কাজ করছেন বলেই সরাসরি পিআরের দ্রুত সুযোগ পাচ্ছেন। অর্থাৎ, বাংলাদেশ, ভারত বা অন্য কোনো দেশ থেকে সরাসরি এই ক্যাটাগরিতে আবেদন করা সম্ভব নয়।
সিএমএর (CMA) প্রতিক্রিয়া
কানাডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (CMA) এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি চিকিৎসক মার্গট বার্নেল বলেন, ‘বর্তমানে কানাডায় ১৩ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক তাঁদের পেশায় কাজ করতে পারছেন না। প্রতিভা ধরে রাখা এবং নতুন চিকিৎসক আকর্ষণ—দুই ক্ষেত্রেই কানাডাকে আরও দ্রুত এগোতে হবে।’