বুধবার, ০৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:৪৩:২৩

টাইগারদের স্বাগত, পাকিস্তানিদের খেলতে না দেয়ার ঘোষণা

টাইগারদের স্বাগত, পাকিস্তানিদের খেলতে না দেয়ার ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘বাংলাদেশ এখানে খেলতে এসেছে আমরা ভীষণ খুশি। অন্যদের নিয়েও সমস্যা নেই। তবে পাকিস্তান দল যদি ধর্মশালায় পা রাখে, তাহলে কিন্তু আমরা ছেড়ে কথা বলব না। শহীদের পুণ্যভূমি কাংড়ায় এত বড় অপমান আমরা কিছুতেই সহ্য করব না।’

এমন মন্তব্যই করেছেন হিমাচল প্রদেশে এক্স সার্ভিসম্যান লিগ অর্থাৎ সাবেক সেনা সদস্যদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বিজয় সিং মানকোটিয়া। তিনি একটি অনলাইন পোর্টালের সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে এ কথা বলেন মঙ্গলবার বিকেলে।

বিদ্রোহীদের মতে, পাকিস্তানের মদতেই ভারতে একটার পর একটা জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছে। অতি সম্প্রতি পাঞ্জাবের পাঠানকোটে বা কাশ্মিরের পুলওয়ামায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা যে হামলা চালিয়েছে তাতে শুধু কাংড়া জেলারই (ধর্মশালা যার অন্তর্গত) অন্তত আটজন জওয়ান শহীদ হয়েছেন। এই পরিবারগুলোর ক্ষত এখনও টাটকা। ফলে পাকিস্তানের ম্যাচ তাদের ভাবাবেগের সঙ্গে চরম অবমাননা ছাড়া কিছু নয়!

এদিকে এমন হুমকির ফলে শৈলশহর ধর্মশালায় চরম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে আগামী ১৯ মার্চ ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে ওটাই সবচেয়ে নজরকাড়া খেলা।

পাকিস্তানের দুই সদস্যের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দল এদিনই ধর্মশালায় নিরাপত্তার যাবতীয় আয়োজন ঘুরে দেখে গেছেন। ধর্মশালায় ম্যাচটা করতে মরিয়া ভারতীয় বোর্ডও প্রাণপণে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে মাছি গলতে পারবে না, এমন কড়া নিরাপত্তা থাকবে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জন্য। পুরো শহরটা এখন থেকেই পুলিশে পুলিশে সয়লাব, গাড়ি থামিয়ে তল্লাশিও চলছে অবিরত।

এদিকে ভারতীয় বোর্ডের কর্মকর্তারা বেশ উদ্বিগ্ন ফৌজিদের দাবি নিয়ে। ফৌজিদের কঠোর অবস্থানের কারণে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় একটা চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যা এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখো দিয়েছে।

জানা গেছে, স্টেডিয়ামের খুব কাছেই রয়েছে কাংড়ার সেনা শহীদদের সম্মানে নির্মিত একটি শহীদ স্মারক। ফৌজিরা হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তান ম্যাচ করার চেষ্টা হলে তারা গিয়ে সেখানে ধরনায় বসবেন। এমনকি অতি উৎসাহী কেউ কেউ পিচ খোঁড়ারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, যদিও সেটা করা প্রায় অসম্ভব।

ধর্মশালা স্টেডিয়াম যার নিজের হাতে তৈরি, সেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব অনুরাগ ঠাকুরের দুশ্চিন্তা অতএব গভীর হচ্ছে। বিজেপির এই এমপি বোর্ডে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ম্যাচটা ধর্মশালায় নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু এখন সেটাই তার প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হিমাচল প্রদেশে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কংগ্রেস অনুরাগকে বেকায়দায় ফেলার এই সুযোগটা ছাড়তে চাইছে না। রাজ্যের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং সেনা পরিবারগুলোর দাবিতে প্রচ্ছন্ন সায়ও দিয়ে রেখেছেন।

এমনকি অনুরাগ নিজে বিজেপি নেতা হলেও তার দলেরই আরেকটা অংশ, যার নেতৃত্বে আছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শান্তাকুমার, তিনিও জোরেশোরে ম্যাচের বিরোধিতা করছেন। অনুরাগের বাবা প্রেমকুমার ধূমল নিজেও এক সময় হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু শান্তাকুমারের সঙ্গে তার পুরনো দ্বন্দ্ব আর বিবাদ এখন পাকিস্তান ম্যাচের ওপরও ছায়া ফেলছে!

সব মিলিয়ে বলা চলে, যত কাণ্ড এখন ধর্মশালায়! ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে জটিলতা এখানে টুর্নামেন্টের হইচই আর আনন্দটাই যেন কেড়ে নিয়েছে।
৯ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে