বুধবার, ০৯ মার্চ, ২০১৬, ১০:৩৭:১৮

একটা সেলফি যেভাবে তার জীবন বদলে দিয়েছে

একটা সেলফি যেভাবে তার জীবন বদলে দিয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আপনি কি সেলফির প্রতি আসক্ত? কিংবা আপনি কি একে হাস্যকর মনে করেন? অনেকের কাছে এর উদাহরণ অনেক ভাবেই হতে পারে কিন্তু আনাস মোডামানির ভাগ্য বদলে গেছে এক সেলফির কারণে৷ দেখে নেয়া যাক কিভাবে :

আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ : বার্লিনে এক শরণার্থী শিবিরে থাকার সময় আনাস মোডামানি একদিন শুনলেন যে, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাদের দেখতে আসবেন এবং তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন৷ ১৯ বছর বয়সি সিরিয়ান তরুণ, যিনি কিনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক ভক্ত, সুযোগটা হাতছাড়া করেননি৷ তিনি তখন ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে ম্যার্কেলের সঙ্গে একটি সেলফি তোলেন৷

ইউরোপে পালিয়ে আসা : দামেস্কে যখন তাদের বাড়ির উপর বোমা পড়ে, তখন মোডামানি এবং তার বাবা-মা ও ভাই-বোনেরা গরিয়া নামক একটি ছোট্ট শহরে চলে যান৷ সেখান থেকে ইউরোপের পথে যাত্রা করেন তিনি৷ প্রথমে লেবানন, এরপর তুরস্ক হয়ে গ্রিসে৷

বিপজ্জনক যাত্রা : মোডামানি যাত্রাপথে প্রায় মরতে বসেছিলেন৷ আরো অনেক শরণার্থীর মতো, একটা রাবার বোটে করে তুরস্ক থেকে গ্রিস আসতে হয়েছিল তাকে৷ মোডামানি জানান, নৌকাটি অতিরিক্ত বোঝাই ছিল এবং এক পর্যায়ে সমুদ্রে তলিয়ে যায়৷ তিনিও প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন৷ কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান৷

পাঁচ সপ্তাহ পায়ে হাঁটা : গ্রিস থেকে পায়ে হাঁটা পথে মেসিডোনিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন মোডামানি৷ হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ায় তিনি হেঁটেছেন অনেকটা পথ৷ এরপর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে পৌঁছান তার চূড়ান্ত গন্তব্য মিউনিখে৷ জার্মানিতে আসার পর তিনি বার্লিনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ তখন থেকেই তিনি বার্লিনেই আছেন৷

রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশায় : বার্লিনে পৌঁছানোর পর মোডামানি বেশ ক’টা দিন কাটিয়েছেন লাগেসো শরণার্থী কেন্দ্রের সামনে৷ তিনি জানান, সেখানকার অবস্থা বেশ জটিল, বিশেষ করে শীতের সময়৷ এক পর্যায়ে তাকে বার্লিনের স্পানডাও অঞ্চলের শরণার্থী কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়৷ তিনি শরণার্থী হিসেবে তার অবস্থা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন৷ আর ম্যার্কেলের সঙ্গে সেলফি তাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে৷

বাড়ির কথা মনে পড়ে : জার্মান পরিবারের সঙ্গে বসবাসের পর থেকে বেশ ভালোই আছেন মোডামানি৷ জার্মান ভাষা শিখছেন এখন৷ তার বেশ কিছু বন্ধুও হয়েছে৷ জার্মানিতে পড়াশোনা করতে চান তিনি৷ তবে তার আপাতত লক্ষ্য হচ্ছে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া৷ কেননা তাহলে নিজের পরিবারকে জার্মানি নিয়ে আসা সহজ হবে তার জন্য৷

শরণার্থীদের সম্পর্কে নেতিবাচক মানসিকতা : জার্মানিতে একটি উন্নত ও নিরাপদ জীবনের আশা মোডামানি৷ তবে শরণার্থীদের সম্পর্কে জার্মানির বর্তমান মনোভাব নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত তিনি৷ তার আশঙ্কা, শরণার্থীদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব ভবিষ্যতে আরো বাড়তে পারে৷ সেক্ষেত্রে তা শরণার্থী বিষয়ক আইনের উপর প্রভাব ফেলবে৷ ফলে তার আবেদন হয়ত বাতিল হবে৷ আর নিজ পরিবারকে জার্মানিতে আনার স্বপ্ন হয়ত স্বপ্নই থেকে যাবে৷-ডিডব্লিউ
০৯ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে