বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১৬, ১০:৪২:১৫

কেন অনেক হিন্দু গো-মূত্র পান করেন?

কেন অনেক হিন্দু গো-মূত্র পান করেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লন্ডনের কিছু দোকানে গো-মূত্র বিক্রি হয়, যার খোঁজ পেয়েছে বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্ক। দক্ষিণ এশিয়ার দোকানুগলোতে ‘গো-মূত্র’ নামেই বিক্রি হয় এটি, যেখান থেকে একটি বোতলও কিনেছেন আমাদের এক সংবাদদাতা।

তবে সেসব দোকানে অন্যসব সাধারণ খাবার বিক্রির পাশাপাশি এটি বিক্রি হয়। একটি দোকানে ঢুকে সংবাদদাতা দেখেছেন যে শেলফে পাউরুটি বিক্রি হচ্ছে তারই নিচের তাকে গো-মূত্র রয়েছে, বোতলে দাম লেখা।

ওই দোকানের একজন কর্মকর্তা বলছেন, 'আমরা এটি রাখি কারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে আসেন এটি কিনতে। এটি তাদের ধর্মীয় আচার-আচরণের সাথে জড়িত। একটি হিন্দু পরিবারে একটি শিশু জন্মের পর যে পূজা করা হয়, সেই পূজা অনুষ্ঠানে শিশুটির ‘শুভকামনায়’ অনেকে এই গো-মূত্র ব্যবহার করেন'।

শুধু যে দোকানেই এটি বিক্রি হচ্ছে তা নয়। ওয়াটফোর্ডে অবস্থিত হরে কৃষ্ণ মন্দির, ভক্তিভেদান্ত মানর – এসব ধর্মীয় স্থাপনাগুলোরও ডেইরি ফার্ম রয়েছে যেখান থেকে তারা এই ‘গো-মূত্র’ উৎপাদন করে যেন পূজা সংশ্লিষ্ট সকল কাজে এটি ব্যবহার করা যায়।

মন্দিরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌরি দাস বলছেন, 'আমরা সত্তরের দশক থেকে এই গো-মূত্র প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করে আসছি। দক্ষিণ এশিয়ানদের অনেকের কাছে এর বিরাট একটি চাহিদা রয়েছে। অনেকে এটিকে পূজার কাজে ব্যবহার করে। আবার অনেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে। এমনকি কোনো জিনিস শুদ্ধ করার কাজেও অনেকে এই গো-মূত্র ব্যবহার করে।

এই মন্দিরেরই একজন সদস্য গো-মূত্র পান করার পর সংবাদদাতা এর স্বাদ জানতে চাইলে প্রদীপ বলেন, ‌'এটি স্বাদে তিতা এবং আমার কাছে এটা ওষুধের মতো মনে হলো'।

দ্য ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সীর একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য গরুর মূত্র এভাবে বিক্রি করা অবৈধ। কিন্তু যদি বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য এটি ব্যবহৃত হয় যেমন একটি উদাহরণ হলো –ত্বকের ময়লা পরিস্কারে যদি এটি ব্যবহৃত হয় তাহলে অবশ্য একে খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হবেনা এবং খাদ্য আইনের মধ্যেও এটি পড়বেনা। কিন্তু এছাড়া অন্যসবক্ষেত্রেই আইনের ব্যবহার হবে'।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে গরুকে একটি পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেসব দোকানে এই ‘গো-মূত্র’ বিক্রি হয় সেখানে দেখা যাবে বোতলের লেবেলের গায়ে হিন্দি ভাষায় লেখা যে এটি ‘গো-মূত্র’ এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যেই এটি বিক্রি হয়।

গৌরি দাস বলছিলেন 'মানুষের খাদ্য হিসেবে আমরা ‘গো-মূত্র’ বিক্রি করিনা। এটা পূজারী এবং ভক্তদের জন্য - তাদের পূজার কাজে ব্যবহারের জন্য'।

মিস দাস এটাও বলেছেন 'এটা নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে সেটা আসলে কপটতাপূর্ণ। আমি বুঝিনা গরুর লেজ ও জিহ্বা খেলে যদি কোনো সমস্যা না হয়, তাহলে মূত্র খেলে সমস্যা কোথায়'।

স্থানীয় সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ভোক্তারা যেন ক্ষতিকর রোগের শিকার না হন এজন্য খাদ্য বহির্ভূত পশু পণ্যগুলো লন্ডনে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এমনকি আমদানিকৃত পণ্যগুলোও ভালোভাবে যাচাইবাছাই করা হয়।

কিন্তু লন্ডনে গো-মূত্র বিক্রির বিষয়ে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। কিন্তু শীঘ্রই এ নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানান সরকারি এই কর্মকর্তা। সূত্র : বিবিসি
১০ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে