বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১৬, ১১:৫৮:১৩

অপহরণকারীর সঙ্গেই থাকতে চায় অপহৃত তরুণী!

 অপহরণকারীর সঙ্গেই থাকতে চায় অপহৃত তরুণী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন হাসপাতালের।  ১৯৯৭ সালে তিনদিনের এক শিশুকে অপহরণের অভিযোগে সম্প্রতি এক নারীকে গ্রেফতার করেছে আফ্রিকান পুলিশ।  ১৯৯৭ সালে ক্যাপটাউন হাসপাতালে জন্ম নেয়া যমজ শিশুর একটিকে অপহরণ করেন ওই নারী।

অপহৃত শিশুটির পারিবারিক নাম ‘জেফানি’।  তবে সে এখন আর শিশু নয়, এখন ১৯ বছর বয়সী আফ্রিকান তরুণী।  জেফানি অপহরণকারী নারীর তত্ত্বাবধানে লালিত পালিত হয়ে আসছিল।

গত বছর স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে জেফানির সাথে অন্য একটি কিশোরীর চেহারা মিলে যাওয়ায় সন্দেহ দানা বাধে।  পরে ওই তরুণীর বাবা-মা পুলিশকে বিষয়টি জানায়।

 ডিএনএ টেস্টে নিশ্চিত হওয়ার পর গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৫১ বছর বয়সী ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  ডিএনএ পরীক্ষায় ওই দুই তরুণী যে বোন তা প্রমাণিত হয় বলে জানায় পুলিশ।

অভিযুক্ত নারী আদালতকে জানান, বৈধভাবেই শিশুটিকে আমি লালন পালন করে আসছি।  একটি রেলস্টেশনে একজন নারী শিশুটিকে দত্তক হিসেবে হস্তান্তর করেছিল।  সেই নারীর খোঁজ এখন আমি জানি না।  শিশুটিকে হস্তান্তরের সময় ওই নারী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রেও স্বাক্ষর করেছিলেন।  কিন্তু সেই কাগজপত্র আমি হারিয়ে ফেলেছি।

আদালতের বিচারক জন হোপ বলেন, ঘটনাটি সত্যিই রূপকথার মতো। দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ঘটনাটি একটি রুপকথা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।  

তবে জেফানির প্রকৃত মা বলেছেন, বিচারটি যখন শুরু হয় তখন আমার বুক ভেঙে যাচ্ছিল।  জেফানি আমাদের প্রথম সন্তান।  গ্রুথ স্কার হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করার পর সে নিখোঁজ হয়।

সেদিনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে জেফানির মা বলেন, আমার বাচ্চাটা তখন কাঁদছিল।  মেরুন রংয়ের পোশাক পরা কেউ একজন দরজার পাশ থেকে বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নেয়ার কথা জিজ্ঞাসা করছিল আমাকে।  আমার ধারণা, ওই লোকটিই আমার শিশুটিকে অপহরণ করেছিল।

তিনি বলেন, আমি চিকিৎসাধীন ছিলাম।  আমার বুকে তখন প্রচণ্ড ব্যথা, ঘুম পাচ্ছিল।  ঘুম ভাঙার পর জেফানিকে না পেয়ে আমি হাসপাতালের প্রায় সবগুলো কক্ষ তন্ন তন্ন করে খুঁজেছিলাম।  কিন্তু কোথাও আমার সন্তানকে খুঁজে পাইনি।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে জেফানি জানিয়েছে চমকপ্রদ কথা।  তিনি বলেছেন, আমার মা হিসেবে এতদিন যাকে দেখে এসেছি তিনি অন্য একজন।  তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য বা মিথ্যা যা-ই হোক, তিনিই আমার মা।  আমি আমার এই মায়ের সাথেই থাকতে চাই।
১০ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে