আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফের উত্তাল মিশর। স্বৈরশাসক আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির পদত্যাগ দাবিতে শুক্রবার ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে মিশরবাসী। গত সপ্তাহে লোহিত সাগরে মিশরের দখলে থাকা দুটি দ্বীপ সৌদি আরবকে হস্তান্তরের ঘোষণায় এই বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়। গত দুই বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এসময় অন্তত ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে। আগামী ২৫ এপ্রিল ফের বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে।
রাজধানী কায়রোতে সিসির পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করে কয়েক হাজার লোক। এসময় তারা ‘সিসি পদত্যাগ কর’ এবং ‘আমরাই আমাদের জমির মালিক’ বলে শ্লোগান দেয়।
মোহাম্মদ হুসেইন নামে এক প্রকৌশলী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমি বিক্ষোভ মিছিলে এসেছি মিশরের পুরো পরিস্থিতির কারণে, কেবল দ্বীপের কারণে নয়।’
কায়রোর মতো আলেকজান্দ্রিয়ায়ও ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করত টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়া থেকে অন্তত ১০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, তারা তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র দেশটির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
রাজধানী কায়রোতে বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ। এদের অনেকে ২০১১ সালের আরব বসন্তের অনুসরণে স্লোগান দেন ‘জনগণ সরকারের পতন চায়’। সিসিকে পতিত স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের সাথে তুলনা করে অনেকের স্লোগান ছিল ‘সিসি-মোবারক’।
লোহিত সাগরের দ্বীপ দুটি সৌদি আবরকে হস্তান্তর করার ঘোষণাকে মিশরীয়রা দেখছে জাতির আত্মসমর্পণ হিসেবে। ফলে এতে তাদের জাত্যাভিমানে আঘাত লেগেছে।
শুক্রবার বিক্ষোভে ইসলামপন্থীদের পাশাপাশি অংশ নেয় সেক্যুলাররাও, যারা এক সময় সিসির সমর্থক ছিল। এদিকে সিসি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, লোহিত সাগরের ওই দ্বীপ দুটি মিশরের ছিল না, ছিল সৌদির। মিশর শুধু এর পাহারাদার ছিল।
তবে সমালোচকরা বলছেন, সৌদি আরবের ‘সাহায্য’ ও বিনিয়োগের বিনিময়ে দ্বীপ দুটি রিয়াদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। বন্দুকের নলের মাথায় ক্ষমতা দখলকারী সিসির শাসনে মিশরের অর্থনীতি দুরাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর মানবাধিকারের অবস্থা তো আরো করুণ।
গত সপ্তাহে মিশর সফরে ছিলেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান। এসময় মিশরের প্রেসিডেন্ট তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে সৌদিকে লোহিত সাগরের দুটি দ্বীপ উপহার হিসেবে প্রদান করেন। ১৯৫০ সাল থেকে দ্বীপ দুটি মিশরের দখলে ছিল। মিশরের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিরান ও সানাফারি দ্বীপ দুটি সৌদি জলসীমায় অবস্থিত হওয়ার কারণেই এগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস