আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনে ‘এক-সন্তান নীতি’র কারণে দেশটির জনসংখ্যায় নারী পুরুষের সংখ্যার আনুপাতিক ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলছে। ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে নারী পুরুষের সংখ্যা। মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় কমে গেছে। মজার বিষয় হচ্ছে বিয়ের জন্য মেয়ের জোগান দিচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভিয়েতনাম।
সিএনএন জানিয়েছে, ভিয়েতনাম-চীন সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলো মেয়েদের পাচার করার জন্য মানব পাচারকারীদের কাছে ‘শিকারি অঞ্চল’ হিসেবে জনপ্রিয়। সেখান থেকে কিশোরীদের যে কোনোভাবে নৌকা, মোটরবাইক কিংবা গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছে চীনে।
পাচারের শিকার হওয়া ভিয়েতনামি তরুণী ল্যান ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সিএনএনকে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্যে তৈরি হচ্ছিলাম। অনলাইনে এক বন্ধু আমাকে গ্রুপ ডিনারে আমন্ত্রণ জানায়। ডিনার শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে চাইলে বন্ধুরা আড্ডাবাজির জন্যে আরো কিছুক্ষণ থাকতে বলে। তারা একসঙ্গে পান করে। এরপর কারা যেন আমাকে তুলে নিয়ে চীনে চলে গেল। আমার যখন জ্ঞান ফিরলো, দেখলাম আমি চীনে।’
পাচারের শিকার হওয়া আরেক ভিয়েতনামি তরুণী নুগুয়ের বলেন, ‘গ্রামে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে দিনদিন বেড়েই চলছিল। একজন ভিনদেশি মানুষের সঙ্গে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এখানে ভালোবাসা বা ভালো থাকার প্রশ্ন আসছে না। প্রশ্ন আমার অধিকার নিয়ে। যখন আমার শাশুড়ি দেখলেন বশে আসার মানুষ আমি না। তখন আমাকে তারা পাচারকারীদের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিল। ফলে তারা তাদের টাকাও ফেরত পেল। এরপর পাচারকারীরা আমাকে দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়ার জন্যে আরেক পরিবারের কাছে বিক্রি করে দিল।’
ভিয়েতনামের জাতিসংঘ পাচার বিরোধী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়কারী হা থা নান জানান, ভিয়েতনামি কিশোরীদের মানব-পাচারকারীরা চীনে নিয়ে যাচ্ছে ‘বিয়ের কনে’ হিসেবে বিক্রি করার জন্যে।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণ চীনা পুরুষদের চীনা নারীকে বিয়ে করতে অনেক খরচ করতে হয়। বিয়েতে খরচের পাশাপাশি বিয়ের পরপরই নতুন বউকে বড়সড় বাড়ি কিনে দিতে হয়। যে কারণে তারা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ‘পাত্রী’ আমদানি করে কমখরচে ঘর সংসারের জন্যে।-বাংলামেইল
১৯এপ্রিল২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এএম