আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বেশ ক’টি রাজ্যে চলছে খরা। খরার কারণে ওই ক’টি রাজ্যের প্রায় ত০ কোটি মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে। এর আগে এমন খরার কারণে ভারতে বেশ ক’জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তবে এবার কুয়ো খুঁড়ে পানি না পাওয়ায় আত্মহত্যা করেছে দেশটির ঝাড়খণ্ড রাজ্যের এক যুবক।
দেশটির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে গ্রামের এক কূয়ো থেকে ২৫ বছরের দিলীপ যাদবের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ৭শ ফুট গভীর কুয়া খনন করেও পানি না পাওয়ার ব্যর্থতায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
ভারতে এবার শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে অনেক অঞ্চলের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এদের অন্যতম ঝাড়খণ্ড রাজ্যটি। গতবছরের ডিসেম্বর থেকে প্রদেশটিতে খরা চলছে। এই গ্রীস্মে পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে গেছে। ফলে এ অঞ্চলের বাসিন্দারা জলের জন্য অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, এই রাজ্যেরই গিরিধি এলাকার বাসিন্দা দিলীপ। পরিবারের পানির কষ্ট সইতে না পেরে দিন কয়েক আগে এক বন্ধুর কাছ থেকে ৭৫ হাজার রুপি ধার করেন তিনি। ওই অর্থ দিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে কুয়া খনন করতে শুরু করেন।
ছোট একটি গরুর খামারের মালিক দিলীপ। গরুর দুধ বিক্রি করেই তার সংসার চলে। গরুর জন্য প্রতিদিন প্রচুর পানির প্রয়োজন। কিন্তু ওই এলাকার কোথাও পানি নেই। খালি-বিল আর জলাশয়গুলো তো আগেই শুকিয়ে গিয়েছিল। গ্রামের পুরনো কুয়োগুলোত পানিশূন্য হয়ে পড়েছিল। সংসারের প্রয়োজন মেটাতে বাধ্য হয়েই কুয়া খোঁড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দিলীপ।
সোমবার সন্ধ্যায় খনন শ্রমিকরা মাটির ৭শ ফুট গভীরে যাওয়ার পরও কুয়াটিতে এক বিন্দু পানির দেখা পায়নি। এতে মর্মাহত হয়েছিলেন যুবকটি। সেদিনের স্মৃতিচারণ করে তার বাবা নরেশ গোপ বলেন,‘ও আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, ‘বাবা, কয়ায় কি পানি পাওয়া গেছে?’ আমি না বলতেই সে তার মোবাইলটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে চলে যায়।’
তার পরিবার ভেবেছিল, ছেলে বাড়ির আশেপাশেই আছে। মেজাজ ঠাণ্ডা হলে ফিরে আসবে। গভীর রাতেও দিলীপ ফিরে না আসায় বাড়ির লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। তারা তাকে খুঁজতে শুরু করে। মঙ্গলবার সকালে ওই কুয়াতেই তার মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়।
২৮ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন