শুক্রবার, ২০ মে, ২০১৬, ০৯:২০:০২

যে অপেক্ষায় রয়েছেন নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের স্বজনরা

যে অপেক্ষায় রয়েছেন নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের স্বজনরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কর্তৃপক্ষ তাকিয়ে আছেন নিখোঁজ মিশরীয় বিমানটির যাত্রীদের স্বজনরা। তবে এ বিষয়ে এখনো মিশরীয় কর্তৃপক্ষ স্বজনদের কোনো কিছু জানাতে পারেনি। কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এখনো বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছে।

ঘটনার পর থেকেই যাত্রীদের স্বজনরা বিভিন্নভাবে মিশরীয় বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অনেকে স্বশরীরে বিমান কর্তৃপক্ষের অফিসে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মিশরীয় বিমান কর্তৃপক্ষ কিংবা দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে যাত্রীদের স্বজনদের কোনো জানাতে পারেনি। এতে স্বজনা খুবই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন।

এদিকে গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের কাছে বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ দেখতে পেয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। এগুলো নিখোঁজ মিশরীয় বিমানটির অংশ বলেই ধারণা করা হচ্ছে। গ্রিসের একজন সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিমানটি যেখানে সমুদ্রে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেই তারা কিছু ধ্বংসাবশেষ দেখতে পেয়েছেন।

এর আগে গ্রিসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পানোস কামেনোস জানিয়েছেন, প্যারিস থেকে কায়রো যাওয়ার পথে মিশরের বিমানটি ধসে পড়ার আগে আকাশে দুইবার চক্কর খেয়েছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন।

তিনি বলছেন, এয়ারবাস এ৩২০ বিমানটি রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবার আগে ৯০ ডিগ্রি বামে, আর ৩৬০ ডিগ্রি বামে ঘুরে দুইবার চক্কর বা ডিগবাজি খায়। এরপরে বিমানটি ৩৭ হাজার ফিট থেকে একেবারে ১৫ হাহার ফিটে নেমে আসে। এরপর ১০ হাজার ফিট ওপর থেকে হারিয়ে যায়।

মিশরের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় বলছে, বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কারিগরি ক্রুটির তুলনায় সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনাই বেশি বলে তারা মনে করে।

মিশরের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী শেরিফ ফাথাই বলছেন, আমি এখনি নিশ্চিত করে কিছু বলবো না, তবে আপনারা যদি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন, তাতে এই ঘটনায় পেছনে সন্ত্রাসী হামলা বা এ ধরণের সম্ভাবনাই বেশি।

গ্রিসের বিমান উড্ডয়ন কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানটি যখন গ্রিসের আকাশসীমা প্রবেশ করে, তখন পাইলটের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে বলেই তিনি জানিয়েছেন।

এর কিছুক্ষণ পর তারা আবার পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিমানটি থেকে আর কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এর দুইমিনিট পরেই রাডার থেকে বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যায়।

মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির সঙ্গে আলাপের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফাসোঁয়া ওঁলাদ বলেছেন, এ ঘটনা কেন ঘটেছে, সেটা খুঁজে বের করা হবে।

গ্রিসের কার্পাথোস দ্বীপের কাছে বড় ধরণের তল্লাশি অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। গ্রিস আর মিশরের সেনাবাহিনী এই তল্লাশিতে অংশ নিচ্ছে। বিমান আর জাহাজ পাঠাচ্ছে ফ্রান্সও। কায়রোতে ফরাসি দূতাবাসে খোলা হয় ক্রাইসিস সেল।

বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে কায়রো সময় রাত আড়াইটায় মিশরের আকাশসীমায় প্রবেশের আগমূহুর্তে তাদের এয়ারবাস এ৩২০ বিমানটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বিমানটিতে তিনটি শিশুসহ ৫৬জন যাত্রী ছিলেন। এছাড়া সাত জন ক্রু ও তিনজন নিরাপত্তা কর্মী ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ৩০জন মিশরের, ১৫জন ফ্রান্সের ও দুজন ইরাকি ছাড়াও ব্রিটেন, কানাডা, বেলজিয়াম, কুয়েত, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, সুদান, চাদ ও পর্তুগালের নাগরিক রয়েছেন।

এমএস৮০৪ বিমানটি যখন পূর্ব ভূমধ্যসাগরের ৩৭হাজার ফুট ওপর দিয়ে যাচ্ছিলো। কর্মকর্তারা জানান, কায়রো সময় ২টা ৪৫ মিনিটে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
২০ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে