আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে অস্ত্রের বিক্রি কমপক্ষে শতকরা ১০ ভাগ বাড়িয়ে দিচ্ছে রাজতান্ত্রিক সৌদি আরব। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইএইচএস তাদের বার্ষিক ‘গ্লোবাল ডিফেন্স ট্রেড’ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পারস্য উপসাগরীয় রাজতান্ত্রিক এ দেশটি ২০১৪ সালে ৬০০ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে কিন্তু ২০১৫ সালে অস্ত্রের পেছনে অর্থ ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩৩ কোটি ডলারে। প্যারিস টুডের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
আইএইচএস’র বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী ও শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা বেন মুরেস জানিয়েছেন, সৌদি আরব গত বছর ইউরোফাইটার জঙ্গিবিমান, এফ-১৫ যুদ্ধবিমান, অ্যাপাচি হেলিকপ্টার, প্রিসিশন-গাইডেড অস্ত্র, ড্রোন এবং গোয়েন্দা সরঞ্জাম কিনেছে। মুরেস জানান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত- এ দু দেশ মিলে যে অর্থের অস্ত্র কিনেছে পুরো ইউরোপ সম্মিলিতভাবে তত অর্থের অস্ত্র কিনতে পারে নি। এ দুই দেশের অস্ত্রখাতে খরচের পরিমাণ পুরো আফ্রিকার সাব-সাহারান দেশগুলোর তিনগুণেরও বেশি।
আইএইচএস’র প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সৌদি আরবের অস্ত্র কেনার কারণে গত বছর মার্কিন অস্ত্র বাজারের আয় ছিল ৬,৫০০ কোটি ডলার। ২০১৪ সালের চেয়ে এ পরিমাণ ছিল ৬৬৬ কোটি ডলার বেশি। ধারণা করা হচ্ছে- ২০১৬ সালে অস্ত্রখাতে আমেরিকার আয় বেড়ে দাঁড়াবে ৬,৯০০ কোটি ডলারে।
মুরেস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সামরিক সংঘাত ও সহিংসতার কারণে আমেরিকা, ব্রিটেন ও পশ্চিমা আরো কয়েকটি দেশ অস্ত্র রপ্তানি করে বিশেষভাবে লাভবান হচ্ছে। তিনি জানান- আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা ও ফ্রান্স হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। সৌদি আরব ও কয়েকটি আরব দেশ অস্ত্র আমদানি বাড়িয়ে দেয়ার কারণে পশ্চিমা দেশগুলো এখন আরো বেশি লাভবান হচ্ছে।
এসব অস্ত্র প্রথমত ব্যবহার করা হচ্ছে দারিদ্রপীড়িত ইয়েমেনের সাধারণ লোকজনের ওপর; এছাড়া বাহরাইনের বিরোধী লোকজনের ওপরও পশ্চিমা অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এর বাইরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর যে তাণ্ডব চলছে তাতেও আরব দেশগুলোর অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে বলে বিভিন্ন দেশ অভিযোগ করে আসছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ এক রিপোর্ট বলেছে, ইয়েমেনে গত এক বছরের বেশি সময়ে যেসব শিশু মারা গেছে তার শতকরা ৬৬ ভাগ মারা গেছে সৌদি মারণাস্ত্রের আঘাতে।
১৪ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই