শনিবার, ১৮ জুন, ২০১৬, ০৬:২২:৫৮

বাংলাদেশের হিন্দু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলবে বিজেপি

বাংলাদেশের হিন্দু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলবে বিজেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের গুপ্তহত্যার ছায়া ঢুকে পড়লো পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে। ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের সহ সম্পাদক স্বামী সেবানন্দকে চিঠি পাঠিয়ে খুনের হুমকি দিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হল শিলিগুড়িতে বিজেপি-র রাজ্য কমিটির বৈঠকে। খবর আনন্দবাজার।

এখানে বলা হল, দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে সেখানকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি জানাবেন। আর দলের অন্য নেতা-কর্মীরা বুথে বুথে সেই দাবিতেই প্রচার আন্দোলন গড়ে তুলবেন। অর্থাৎ, এত দিন যে হিন্দুত্ববাদের সুর ছিল মৃদু, হিন্দুহত্যা কাণ্ডকে হাতিয়ার করে সেই সুর চড়ালো পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি।

আরএসএস-এর প্রচারক দিলীপবাবুকে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি করে এবং একের পর এক সঙ্ঘ নেতাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে বসিয়ে হিন্দুত্ববাদের রাস্তায় হাঁটার ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটে মালদহের বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রে সেই রাস্তাতেই সাফল্য এসেছে। সেখানে কালিয়াচকের ঘটনা নিয়ে বিজেপি-র প্রচার দলকে এক জন বিধায়ক এনে দিয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ ঘরোয়া আলোচনায় প্রায়ই মন্তব্য করছেন, এখানে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার আশা তাদের ছাড়তে হবে। অন্তত এবার বিধানসভা ভোটের অভিজ্ঞতা তা-ই। সে ক্ষেত্রে মেরুকরণের রাজনীতিতে হেঁটে সংখ্যাগুরুর ভোট নিজেদের দিকে এককাট্টা করাই লোকসভার ভোটের জন্য অন্যতম কৌশল হওয়া উচিত। রাজ্য কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রস্তাব পাশ করানো সেই প্রচেষ্টারই ফসল।

শিলিগুড়িতে দলের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকের প্রথম দিন উদ্বোধনী ভাষণেই দিলীপবাবু বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। সেখানে যে সংখ্যালঘুরা রয়ে গিয়েছেন, তাদের উপর অকথ্য অত্যাচার হচ্ছে। তাদের ধর্ম পালনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মন্দির ভাঙা হচ্ছে। হত্যাও করা হচ্ছে।’ এই প্রেক্ষিতেই জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ দু’জন বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি জানান। এর পর দিলীপবাবু নিজেও হাইকমিশনে যাবেন।

তবে জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন দিলীপবাবু। তিনি জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে আজ শনিবার বিধাননগরে সভা হবে। এরপর সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে এবং অন্যত্র বুথওয়াড়ি সভা করে সচেতনতা গড়া হবে। এ দেশের বিদ্বজ্জনেদের প্রতি দিলীপবাবুর কটাক্ষ, ‘যাঁরা এখানে অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদ করেন, তারা বাংলাদেশের ঘটনাবলিতে নীরব কেন?’ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের এক প্রতিনিধিদল কলকাতায় এসে দিলীপবাবুর সঙ্গে দেখাও করেছেন।

বাংলাদেশের জামাত বা আইএস জঙ্গিরা সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নানা অপরাধ করছে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। সেই কারণেই খাগড়াগড়, কালিয়াচক ইত্যাদি কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে মমতা সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে এই বৈঠকের রাজনৈতিক প্রস্তাবেও।

পশ্চিমবঙ্গে আগামী পঞ্চায়েত ও লোকসভায় সংগঠন ও ভোট বাড়াতে হিন্দুত্ববাদের পাশাপাশিই মোদি সরকারের উন্নয়নকেও ব্যবহার করবে বিজেপি। যে কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নাড্ডা এবং সিদ্ধার্থনাথ এ দিন বৈঠকে মোদি সরকারের দু’বছরের সাফল্য ব্যাখ্যা করেন।

১৮ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে