শনিবার, ১৮ জুন, ২০১৬, ১১:৪২:১৬

বোনকে নির্মমভাবে খুনের পর ঘাতক ভাই বলল, ‘আমি তাকে খুন করতে চাইনি, আমি এখনো কাঁদছি’

বোনকে নির্মমভাবে খুনের পর ঘাতক ভাই বলল, ‘আমি তাকে খুন করতে চাইনি, আমি এখনো কাঁদছি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৯ বছরের বোনকে পিটিয়ে হত্যা করল ভাই। বোনের অপরাধ- সে প্রেমিককে বিয়ে করতে চেয়েছিল। তাই পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে নিজের বোনকে নির্মমবাবে হত্যা করল পাষণ্ড ভাই। নিহতের নাম আনুম মাশিহ এবং ঘাতকের নাম সাকিব।

গত ১০ জুন পাকিস্তানের শিয়ালকোট শহরের কাছে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘাতক সাকিবকে আটক করেছে পুলিশ।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, আনুম মাশিহ তার প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এতে রাজি ছিল না তার পরিবার। ঘটনার দিন এই বিয়ে নিয়েই আনুমের সঙ্গে তার মাত্র দু বছরের বড় ভাই সাকিব মাশেহ’র কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সাকিব তার বোনকে চেলা কাঠ দিয়ে পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তরুণী অনুম।

শিয়ালকোট শহরের এক কারাগার থেকে টেলিফোনে ঘাতক সাকিব সিএনএনকে বলেন, সে আমার ছোট বোন। আমি তাকে খুন করতে চাইনি। সে মারা যাওয়ার পর থেকে আমি কাঁদছি। সে ছিল আমার বোন।

আনুম ছিলেন আধুনিক ও স্মার্ট এক সুন্দরী নারী। তাদের পারিবারিক ফটো অ্যালবান থেকে খুঁজে পাওয়া ছবিতে তাকে এরকমই মনে হয়েছে। তিনি ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল এক তরুণী। তার মাথা ভর্তি কালো লম্বা চুল এবং চোখ দুটো রোদচশমায় ঢাকা।

তার বাবা ইউসুফ মাসিহও মেয়ের এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। কেননা তার মেয়ে যাকে পছন্দ করেছিলেন সে ছিল তাদেরই আত্মীয়। এজন্যই তার আপত্তি ছিল। হত্যর বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,‘তারা দুই ভাই-বোন তর্ক শুরু করেছিল। একসময় আমার ছেলে গিয়ে মেয়েকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। কিন্তু সে তাকে খুন করতে চায়নি।’ আনুমের হত্যাকাণ্ডকে তিনি ‘অনার কিলিং’ মানতেও নারাজ। তিনি ভাইয়ের হাতে বোনের হত্যাকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবেই দেখছেন।

পাকিস্তানে এ ধরনের অনার কিলিং অতি সাধারণ ঘটনা। চলতি বছরের গত পাঁচ মাসে দেশটির ২১২ জন নারীকে পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে হত্যা করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতেই নিজের পছন্দে বিয়ে করার অপরাধে এক তরুণীকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল তারই মা আর ভাই মিলে। দেশটিতে এইসব হত্যাকাণ্ডের বিচারও হয় না বললেই চলে।
১৮ জুন ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে