আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবের মিনায় শয়তানকে পাথর মারার রীতি পালনের পথে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে শত শত হাজি মারা গেছেন।
হজ্জে গিয়েছিলেন বিবিসির কয়েকজন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে দু'জন ঘটনাস্থলে কী দেখেছেন, তার বর্ণনা পাঠিয়েছেন।
বিবিসি-র সাংবাদিক বশির সা’দ আবদুল্লাহি মিনার বিপর্যয়ের স্থান থেকে আকস্মিক হুড়োহুড়ির এই বর্ণনা পাঠান: "মিনা শহরের কেন্দ্রস্থলে যেখানে আমি দাড়িয়ে আছি, সেখান থেকে আমি সাদা চাদরে ঢাকা মৃতদেহ দেখতে পাচ্ছি। পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে তাই আমি মৃতদেহগুলো গুনতে পারিনি।
"কিন্তু আমার চোখ যতদূর দেখতে পারছে, তত দূর আমি শুধু মৃতদেহই দেখতে পারছি। এলাকার আশে-পাশে বেশ কয়েকজন শোকাহত আত্মীয়-স্বজন ঘুরছেন, এবং মিনার তাঁবু শহর থেকে অন্যান্য হাজিরাও এসেছেন দেখতে এবং সমবেদনা জানাতে।
"পুলিশ মৃতদেহগুলো একত্র করছে এবং এলাকার ভেতর দিয়ে মানুষের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে, একই সাথে একের পর এক এ্যাম্বুলেন্স আসছে আর যাচ্ছে।
"তবে আমরা যেহেতু ঘটনাস্থলে ঢুকতে পারছি না, আমরা জানি না এ্যাম্বুলেন্সগুলো কী করছে।যেখানে মৃতদেহগুলো রাখা হয়েছে তার উপর হেলিকপ্টার ঘোরা ফেরা করছে"।
‘সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য কেউ ছিল না’
বিবিসির হাউসা সার্ভিসের সাংবাদিক সিমা ইলা ইসুফু ঘটনাস্থলের খুব কাছে ছিলেন। তিনি আমাদের জানান তাঁর ফুফু হুড়োহুড়ির ঘটনায় মারা গেছেন। তাঁর বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো:"যেখানে গিয়ে পাথর ছুড়তে হয়, অনেক লোকজন সেদিক যাচ্ছিলেন, আবার অনেক লোক বিপরীত দিকে যাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে সব বিশৃঙ্খল হয়ে পরে এবং হঠাৎ করে মানুষ মাটিতে পরে যেতে শুরু করে।
"সেখানে নাইজেরিয়া থেকে আসা মানুষজন ছিল, সাদ থেকে আসা লোকজন, সেনেগালের নাগরিক আর অন্যান্য দেশের লোকজন।
"লোকজন নিরাপদ জায়গায় যাবার জন্য এক অপরের উপরে উঠতে শুরু করে, এবং সেভাবেই অনেক লোক মারা যান। অনেকে আল্লাহ-র-নাম ডাকছিলেন, অন্যদিকে বাচ্চা এবং শিশুসহ অনেকে কাঁদছিলেন।
"মানুষ মাটিতে পরে সাহায্য চাচ্ছিলেন, কিন্তু তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য কেউ ছিল না। ঘটনার ছাপ আমি যে দলের সাথে ছিলাম তাদের উপর পরে।
"হুড়োহুড়ি এবং মানুষের পায়ের চাপে আমি আমার ফুফুকে হারাই এবং আমাদের দলের আরো দুজন নারী, একজন মা এবং তার মেয়ে, এখনো নিখোঁজ রয়েছে"।- সূত্র বিবিসি
২৫ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস