আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এবারের হজে পদদলিত হয়ে ৭১৭ জন হাজীর শাহাদাত বরণের কারণ উদঘাটিত হয়েছে। মিনায় হাজীরা যখন শয়তানকে পাথর মারছিল ঠিক তখন পদদলিত হয়ে সাত শতাধিক হাজী মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো প্রায় ৮ শতাধিক হাজী। ৭১৭জন হাজীর মধ্যে শুধু ইরানেরই ৯৫জন। ইরান এঘটনায় সরাসরি সৌদিকে দায়ী করলে, সৌদি প্রশাসন উঠে পড়ে লাগে। এমন সময় হঠাৎই বেরিয়ে আসে নির্মম এ মৃত্যু রহস্যের মূল কারণ।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে শয়তানকে পাথর মারতে সৌদি যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ ভিআইপি মর্যাদার হওয়া তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বহর তাদেরকে বিশেষ জায়গা করে দিচ্ছিলেন। এমন সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এফএনএ। তবে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে হাজিদের দু’টি দল ছোট একটি স্থানে হঠাৎ জড়ো হওয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বার্তা সংস্থাটি বলছে, যুবরাজের বিশাল নিরাপত্তা বহরে সেনা ও পুলিশসহ সাড়ে ৩শ’র বেশি নিরাপত্তাকর্মী ছিলো। যারা শয়তানের দিকে পাথর মারতে যাওয়া হাজিদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা করে যুবরাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। তাদের ধাক্কাধাক্কিতেই হাজিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, যুবরাজের সুবিধা ও নিরাপত্তার জন্য পাথর ছুঁড়তে যাওয়ার ৫টি পথের মধ্যে দুটো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে অন্য পথগুলোতে ভিড় বেড়ে যায়।
দুর্ঘটনার দায় সৌদি যুবরাজের বলেই সৌদি শাসক নিজেকে এই ইস্যু থেকে নিজেকে দুরে সরিয়ে নিয়েছেন বলেও দাবি করে এফএনএ। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৭শ’ ১৭ জন বলা হলেও এফএনএ বলছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১৩শ’র বেশি।
ইরানের হজ সংস্থা ওহাদিও দাবি করেছে, পাথর ছোঁড়ার স্থানটিতে যাওয়ার ৫টি রাস্তার মধ্যে ২টি বন্ধ ছিলো আর সে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অবশ্য সৌদি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ করে বলেছেন, হাজিরা সময়সূচি মেনে চলেননি বলেই পদদলিতের ঘটনা ঘটেছে। সৌদি সরকার হাজিদের ওপর দায় চাপালেও এর বিরোধিতা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনার জন্য সৌদি সরকারের অব্যবস্থাপনা ও ভুল পদক্ষেপই দায়ী। আর তাই, সৌদি সরকারকে দুর্ঘটনার দায় অবশ্যই নিতে হবে।
খামেনির মতোই সৌদি বাদশাহ সালমান আল সৌদও সরকারের অব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গ টেনেছেন। বাদশাহ্’র মতে, হজ আয়োজন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে আরো উন্নতি করা প্রয়োজন।
২৫ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ