আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের চিত্রল অঞ্চলে এক কালাশ কিশোরীর ধর্মান্তর নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বহু দেবদেবীর পূজা করা সংখ্যালঘু কালাশ জনগোষ্ঠীটির রিনা নামের এক কিশোরী গত সপ্তাহে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।
কিন্তু তাকে জোর করে আগের ধর্মে ফেরানো হয়েছে এবং সে ইসলাম ত্যাগ করেছে, এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক গোলযোগের সূত্রপাত্র হয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়।
ওই দিন বহু মানুষ লাঠি ও পাথর নিয়ে রিনাদের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মারমুখি জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে।
পরে রিনাকে কালাশ উপত্যকার বাড়ি থেকে চিত্রলে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।
উভয়পক্ষের বয়োঃজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর রিনা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তার মুসলিম আত্মীয়দের সঙ্গেই তিনি থাকবেন।
সেই সংবাদ সম্মেলনে রিনার পরিবার, কালাশ ও মুসলিম, উভয় সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনায় প্রকাশ, রিনা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এক মাদ্রাসায় একটি মুসলিম পরিবারের সঙ্গে রাত পার করে। পরে সে বাসায় ফিরে যায়। সেখানে গিয়ে সে কালাশ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে। এতে প্রতিবেশী মুসলিমদের ধারণা হয় রিনা তার পুরনো কালাশ ধর্মে ফিরে গেছে। এই নিয়েই মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়ে তা মারামারিতে রূপনেয়।
এ বিষয়ে রিনা জানান, এক মুসলিম আত্মীয় তাকে বলেছিল, সে (রিনা) যেহেতু এখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাই সে কালাশ পোশাক পড়তে পারবে। কিন্তু পরে যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে তখন মুসলিমদের মতো সালোয়ার-কামিজ পড়তে হবে। তাই সে বাড়িতে ফিরে কালাশ পোশাক পরেছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিত্রল জেলার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রিনার বক্তব্য সত্যমিথ্যা যাই হোক, তা সহিংতা বন্ধ করতে কাজে লেগেছে।
এর আগে এই এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাই এ ঘটনায় এলাকার সবাই মর্মাহত বলে জানান তিনি।
২২ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই