আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ব্রেক্সিট– বারবার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রিটেনের নিয়োগমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। কিন্তু প্রবাসী ভারতীয়রা কোনও আশার আলো দেখছেন না। ব্রিটেনের অর্থনীতি টালমাটাল। এই অবস্থায় তাঁদের মধ্যে কাজ হারানোর ভয় চেপে বসেছে। কারণটা জানালেন তামিলনাড়ুর ছেলে লোগানাথান গণেশন।
২০১৫ সালে ব্রিটিশ মহিলাকে বিয়ে করে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। লন্ডনে একটি সংবাদমাধ্যমে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু সেই সংবাদমাধ্যমের সদর দপ্তর জার্মানিতে। গণেশনের ভয়, ওই সংস্থার ওপরেও ব্রেক্সিট–এর প্রভাব পড়বে। ওরা হয়ত লন্ডনে ঝাঁপ বন্ধ করে দেবে। ফলে তিনিও কাজ হারাতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলোর ওপরেও ব্রেক্সিট–এর প্রভাব পড়বে। এর আগে ব্রিটেনে একটি সদর দপ্তর খুললেই চলত।
এখন ব্রিটেনের পাশাপাশি ইউরোপেও সদর দপ্তর রাখতে হবে। ফলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। একটি সফটঅয়্যার সংস্থার ম্যানেজার তৃপ্তি প্যাটেল জানালেন, বেশ কয়েকটি সংস্থা ইতিমধ্যেই ব্রিটেন থেকে ব্যবসা গোটানোর কথা ভাবছে। এতে কর্মসংস্থানে বড়সড় ধাক্কা লাগবে। ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে ব্রিটেনে পাকাপাকিভাবে থাকার প্রবণতাও কমছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলো মোট রপ্তানির ১৭ শতাংশ ব্রিটেনে করে থাকে, যার আর্থিক মূল্য ৬.৭০ লক্ষ কোটি টাকা।
ব্রেক্সিট–এর ফলে প্রশ্নের মুখে ২০ হাজার গোয়ানিজের ভবিষ্যৎ। গোয়ার বাসিন্দারা পর্তুগালের নাগরিকত্ব নিয়ে ব্রিটেনের কলকারখানায় কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ অফিসে কাজ করেন। সুইন্ডন, লন্ডন, লেস্টারেই মূলত তাঁরা থাকেন। সুইন্ডনের বাসিন্দা এন সিলভা জানালেন, তাঁদের পর্তুগালের নাগরিকত্ব থাকায় কাজ হারাতে পারেন। লন্ডনের বাসিন্দা শিশির বাজোরিয়ার ব্রিটেন এবং জার্মানিতে দুটি সংস্থা রয়েছে। ব্রেক্সিট–এর ফলে ব্রিটেনের সংস্থাটি গোটা ইউরোপে আর অবাধে বাণিজ্য করতে পারবে না।
চাকরি হারানোর ভয়ে বাঙালিরাও, জানালেন অনন্যা মজুমদার। লন্ডনে তাঁর চামড়ার জিনিসের ব্যবসা। ব্রিটেনের ৮ লক্ষ প্রবাসী গুজরাটি অবশ্য ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। গুজরাটি ব্যবসায়ী এবং তরুণরা চেয়েছিলেন, ই ইউ–তে থাকুক ব্রিটেন। এতে কর্মসংস্থান বাড়বে। জোটের সদস্যভুক্ত দেশে অবাধে বাণিজ্য করা যাবে। যদিও বয়স্ক এবং ছোট সংস্থার মালিকরা চেয়েছিলেন ব্রেক্সিট। কারণ এতে তাঁদের প্রতিযোগিতা অনেক কমবে। পূর্ব লন্ডনের বাসিন্দা ফকির দুঙ্গারিয়ার মতে, আখেরে ভারতীয়দের লাভই হবে। কারণ অদূর ভবিষ্যতে জিনিসের দাম কমবে।-আজকাল
২৬জুন২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এআর