আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিজড়াদের বিয়ে করার ধর্মীয়-আইনি অনুমোদন দিয়ে পাকিস্তানে একটি ফতোয়া জারি করা হয়েছে। এ পদক্ষেপকে সাবধানতার সঙ্গে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশটির হিজড়া অধিকার আন্দোলন কর্মীরা।
হিজড়া অধিকার আন্দোলন কর্মীরা বলছেন, এ বিষয়ে মানুষের মনোভঙ্গি এখনো বদলায়নি। তাই এই সাবধানতা।
রোববার পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের একটি দল এ ফতোয়া জারি করে। তানজিম ইত্তেহাত-ই-উম্মাহাত নামের লাহোরভিত্তিক একটি ধর্মীয় সংগঠনের ৫০ সদস্যের একটি দল এ ফতোয়া দেন।
ফতোয়ায় বলা হয়, ইসলাম ধর্মানুযায়ী যেসব হিজড়ার শরীরে নারী বা পুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট সম্পন্ন দৃশ্যমান চিহ্ন দেখা যাবে তারা তাদের বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করতে পারবেন।
কিন্ত যাদের শরীরে উভয় লিঙ্গের দৃশ্যমান চিহ্ন থাকবে তারা বিয়ে করতে পারবেন না। হিজড়াদের অপমান বা হেয় করার উদ্দেশ্যে করা যেকোনো কাজ ইসলামে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
তবে এ ফতোয়া জারির ফলে বিষয়টি নিয়ে কোনো আইনি বাধ্যবাধ্যকতা আরোপ করা সম্ভব নয়।
বিবিসির উর্দু বিভাগের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হিজড়া অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী কর্মী আলমাস ববি বলেন, ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী এরই মধ্যে বিয়ের অধিকার রয়েছে। কিন্তু সমাজে আমাদের নিয়ে যেসব অপধারণা প্রচলিত তা দূর করার পদক্ষেপ না নিলে সত্যিকার অর্থে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরেক সামাজিক অধিকার আন্দোলন কর্মী বলেন, এটি একটি ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু আইনগতভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হবে না। এখন বিষয়টির রাষ্ট্রীয় আইনগত অনুমোদন দরকার।
তিনি বলেন, পকিস্তানের পুলিশ প্রায়ই হিজড়া দম্পতিদের সমকামিতার অভিযোগে আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে শাস্তি দেয়। সরকার এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ না নিলে বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট হিজড়াদেরও নারী-পুরুষের সমান নাগরিক অধিকার দেয়ার আদেশ জারি করেন।
আদেশে হিজড়াদের সম্পত্তির উত্তরাধীকারও দেয়া হয়। এর আগের বছর তাদের ভোটাধিকারও দেয়া হয়।
তবে একই আদেশে সমকামীদের বিয়ের অনুমোদন দানে অস্বীকৃতি জানান আদালত। পাকিস্তানে পুরুষ সমকামীদের হরহামেশাই সমকামবিরোধী আইনের আওতায় এনে শাস্তিও দেয়া হয়।
২৮জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম