আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ছুরিকাহত হয়ে রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পড়েছিলেন বছর চব্বিশের তরুণী। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল তাঁর গোটা শরীর। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ফিরে তাকাননি ট্রেনের জন্য অপেক্ষারত যাত্রীরা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে প্ল্যাটফর্মেই মারা যান ইনফোসিস কর্মী এস স্বাথী। পুলিশ জানিয়েছে, সাহায্যের হাত বাড়ানো তো দূরের কথা, অনেকেই স্বাথীকে পাশ কাটিয়ে ট্রেন ধরার জন্য ছুটেছেন। এমনকী, অনেকে মোবাইল ফোনে মুমূর্ষু স্বাথীর ছবি তুলে যে যাঁর ট্রেনও ধরেছেন। শুক্রবারের এই ঘটনায় ভেসে উঠেছে শহরের অমানবিক মুখের ছবি। ঘটনার চার দিন পর মঙ্গলবার মিডিয়ায় মেয়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভেঙে পড়লেন স্বাথীর বাবা স্বান্তনা গোপাল কৃষ্ণ। তাঁর আক্ষেপ, “মূক ট্রেনযাত্রীদের জন্যই আমার মেয়েকে আর দেখতে পারলাম না।”
স্বাথীর পরিবারের অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরেই স্বাথীকে উত্যক্ত করছিল একটি ছেলে। পুলিশের অনুমান, স্বাথীর উপর হামলার পিছনে রয়েছে সেই সন্দেহভাজন। ঘটনার তদন্ত করছে চেন্নাই পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি দিনের মতো ঘটনার দিনও অফিসে যাওয়ার জন্য ট্রেনের অপেক্ষায় ছিল স্বাথী। প্ল্যাটফর্মের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, একটি ব্যাকপ্যাক নিয়ে ওই সন্দেহভাজন তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্য একটি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে সেই ব্যক্তি। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। তদন্তে ‘গাফিলতি’র জন্য গতকাল পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। পাশাপাশি, আগামী দু’দিনের মধ্যে খুনিকে ধরার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালতের প্রশ্ন, “ঘটনার সময় পুলিশ অফিসারেরা কোথায় ছিলেন? ঘণ্টা দু’য়েক ধরে স্বাথীর দেহ প্ল্যাটফর্মে পড়েছিল।” যদিও মৃতের বাবা জানিয়েছেন, পুলিশি তদন্তের উপর আস্থা রয়েছে তাঁর পরিবারের।
এ দিন গোপাল কৃষ্ণ জানিয়েছেন, খুবই নরম মনের মেয়ে ছিল স্বাথী। নিজের অঙ্গদানও করতে চেয়েছিল সে। গোপাল কৃষ্ণ বলেন, “আজ মেয়ে বেঁচে থাকলে সে প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারতাম আমরা।” তবে তাঁর আক্ষেপ, “আশপাশের কোনও ব্যক্তি যদি খুনিকে বাধা দিত তবে হয়তো এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত, বেঁচে থাকত আমার মেয়ে।
২৯জুন২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/আরিফ