আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের ভিআইপি জোন তথা কুটনিতিক পাড়া হিসেবে খ্যাত গুলশান ২। এখানে অবস্থিত স্পেনিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজানে শুক্রবার রাতে ঘটে গিয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণকালের ভয়াবহতা। যা কখনোই এই দেশের মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি।
আর্টিজানের ঘটে যাওয়া ঘটনায় শোকস্তব্ধ পুরো বাংলাদেশ। শোকাগ্রস্ত বিদেশিরাও। এখানেই নির্মমভাবে জবাই করে খুন করা হয় দেশি, বেদেশি নারী-পুরুষ ২০ জনকে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্মম ও কালো একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।
এদিকে এই ঘটনায় খুন হয়েছে ভারতীয় তরুণী তারিশি জৈন। তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আদরের মেয়েকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ পুরো পরিবার। এমনকি ভারতীয় নেতা-নেত্রীসহ সাধারণ মানুষও এ ঘটনায় শোকস্তব্ধ। সে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে তারিশি জৈনর পরিবারকে স্বান্ত্বনা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু, এতে কি আর মা বাবার মন মানে?
ভারত থেকে বাংলাদেশে কেন এসেছিলেন ভারতীয় তরুণী তারিশি জৈন? এমন প্রশ্নে উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, তারিশি জৈনর জীবনের বিরাট একটা সময় কেটেছে ঢাকাতে। তিনি ঢাকার ঢাকার আমেরিকান স্কুলেই পড়াশোনা করতেন। এরপর তিনি উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য চলে যান আমেরিকা বার্কলেতে। সেখানে থেকেই তিনি পড়ছিলেন।
সম্প্রতি বার্কলে থেকে ভারতে ফিরেন তিনি। এরপর হৃদয়ের টানে শৈশব কাটানো প্রেয় ঢাকাতে এসেছিলন চেনা-জানা, বন্ধু-বান্ধদের সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু, এই আসাটাই যেন তার জন্য কাল হল। হাসি-খুশি তারিশিকে লাশ হয়ে এখন ফিরতে হচ্ছে ভারতে! এ যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার।
সূত্র বলছে, ঘটনার দিন রাত শুক্রবার তিনি খেতে এসেছিলেন ঢাকার অভিজাত ভিভিআইপি জোন গুলশানে অবস্থিত স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হালি আর্টিজানে। আর সেসময়ই আইসিস জঙ্গিরা তাদের জিম্মি করে ফেলেন। এরপর জঙ্গিরা নির্মমভাবে তাকেসহ খুন করে ২০ জনকে।
পরের দিন সকালে বা্ংলাদেশের সেনা কমন্ডোরা যখন অভিযান শেষে রেস্তোরাঁর ভেতর থেকে নিহতদের রক্তাত্ব নিথর দেহ বের করে আনেন, সেখানেই পাওয়া যায় তারিশির মৃতদেহ। তারিশিকে জঙ্গিরা গলা কেটে খুন করে।
এদিকে তারিশির কথা জানতে পেরে টুইট করে শোকপ্রকাশ করেন ভারতের পরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সেই সঙ্গে তিনি জানান, তারিশির বাবা ও মা-র সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। ঢাকায় যাতে তারা অতি শীঘ্র পৌঁছতে পারেন তার জন্য ভারত সরকার ভিসার বন্দোবস্ত করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
৩ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন