আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিন্দু বাবার শেষকৃত্য করার রীতি তার ছেলেন। কিন্তু ছেলে না করায় কাজটি করলেন এক মুসলিম মেয়ে। কিন্তু কেন?
প্যারালাইজড বাবাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায় ছেলে। পরে তিনি এক মুসলিম দম্পতির আশ্রয়ে ছিলেন। মৃত্যুও হয়েছে সেই ঘরে। তার পরেও সেই বৃদ্ধ বাবাকে সৎকার করতে রাজি হননি তার ছেলে। এমনকি বাবাকে শেষবারের মতো দেখতেও আসেনি ছেলে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে ভারতের তেলেঙ্গানার ওয়ারঙ্গল জেলার ইয়াকুব বাই নামে এক মুসলিমের আশ্রয়ে কে শ্রীনিবাসন নামে ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। কিন্তু তার ছেলে বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এরপর ইয়াকুব বাই নিজেই হিন্দু রীতি মেনে বৃদ্ধের দেহ সৎকার করেন।
ধর্মের নাম করে সমাজে বিষ ঢেলে চলে এক দল মানুষ। আর এক দল মানুষ জীবন দিয়ে দেখান, ধর্ম আসলে মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম আর কর্তব্য। যেমন ইয়াকুব বাই। তিনি এবং তার স্বামী একটি বৃদ্ধাশ্রম চালান। বিনা টাকায় সেখানে অবহেলিত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আশ্রয় দেন, সেবা করেন। কোনো জাতপাত কিংবা ধর্মের বাধা নেই এখানে।
এই আশ্রমে প্রায় ৭০ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন। দু’বছর আগে একটি বাস স্টপের কাছ থেকে শ্রীনিবাসনকে প্যারালাইজড অবস্থায় উদ্ধার করেন ওই মুসলিম নারী। বৃদ্ধের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে যোগাযোগ করা হলেও শ্রীনিবাসনকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাননি তার ছেলে। তারপর থেকে এতোদিন পর্যন্ত ইয়াকুব বাইয়ের আশ্রয়েই থাকতেন ওই বৃদ্ধ।
এদিকে মঙ্গলবার বৃদ্ধের মৃত্যুর পর আবার তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু বৃদ্ধের ছেলে জানান, সম্প্রতি তিনি হিন্দু ধর্ম থেকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তাই তিনি তার বাবার সৎকার করতে রাজি নন। এমতাবস্থায় বৃদ্ধের সৎকারের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন ইয়াকুব বাই। আর কেনই বা পারবেন না, বাবার মতোই যে তাকে এতোদিন আগলে রেখেছেন তিনি।
০৮ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম