মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬, ০৭:০৮:৩৮

বউকে কামড়ে কারাগারে স্বামী

বউকে কামড়ে কারাগারে স্বামী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোনো কুকুর-বিড়াল নয়, মানুষই কামড়াচ্ছে আরেকজন মানুষকে।  প্রথম কামড়টা পড়েছিল ঘাড়ে, তারপর পিঠ, কান, নাক। খাটো লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরা পাকানো চেহারার হিংস্র এক হায়েনা।

যন্ত্রণায় হাত-পা ছুড়ে ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন তার মাস ছয়েকের পুরনো বউ।  কিন্তু সে সুযোগ পেলে তো, নাগাড়ে বিড় বিড় করে চলেছে হবিউল— ‘খালি অপবাদ দেয়া আমার নামে, এবার দেখ কেমন লাগে।  ফের সে আবার কামড়ে দেয় বউকে।

বউয়ের চিৎকারে এ ঘর ও ঘর থেকে ছুটে আসেন বাড়ির লোক, দরজায় উঁকি ঝুঁকি মারছেন পড়শিরাও। কিন্তু হবিউলকে আটকায় কে? সামনে এগিয়ে আসার সাহস কুলাচ্ছে না তাদের।  চোখ পাকিয়ে দাঁত বের করে হবিউল সমানে আওড়ে চলেছে যে, ‘কেউ আসুক দেখি ধরতে, এলেই কামড়ে দেব।’

শেষতক পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।  সে কি ফোঁস! তারা বলছেন, পেছনে মুড়ে আমাদেরও কামড়ে দেবে বলে শাসাচ্ছে গো।

এ খবর গিয়েছিল থানায়।  একটু অস্বস্তি নিয়েই গ্রামে এসেছিলেন বেলডাঙার থানার পুলিশ।  তারপর পাকড়াও করে নিয়ে যায় হবিউলকে।  

কপালের ঘাম মুছে থানার বড়বাবু মৃণাল সিংহ বলছেন, কী কাণ্ড! কুকুর-বিড়ালের আঁচড়-কামড়ের ঢের কেস দেখেছি।  তাই বলে এমন কামড়ে দেয়া মানুষ।  কিন্তু কেন এমন খেপে গেল কেন রেজিনগরের আটপৌরে গ্রাম জয়নগরের হবিউল শেখ?

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রী ‘বিবাহবহির্ভুত’ সম্পর্ক নিয়ে হবিউলকে সন্দেহ করতেন।  সে সন্দেহ একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো নয় বলেই মনে করছেন হবিউলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

তা নিয়েই নব্যদম্পতির মধ্যে চুলোচুলি লেগেই থাকত।  পড়শিরা জানাচ্ছেন, কখনও মধ্য রাতে তুমুল ঝগড়া কখনও বা স্ত্রীকে ধরে মারধর— এ লেগেই ছিল।  হবিউলের স্বভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামের পাড়া-প্রতিবেশীও।  

সদ্য বিয়ে হয়েছে।  হবিউলের স্ত্রী, কখনো পড়শির কাছে, কখনো বা নিজের বাপের বাড়ির লোকজনের কাছে গিয়ে কম-কান্নাকাটি করেননি এ নিয়ে।

রেজিনগরের বটতলার তরুণীটি বলেন, ‘বিয়ের কিছুদিন পরই বুঝতে পারি তার এক বউদির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।  তা নিয়ে ওকে বলতেই মারধর করত।  কাকেই বা জানাব, নিজের বাপ-মাকে বলতে গিয়েও শুনতে হত— ক’দিন মানিয়ে নে।  সব ঠিক হয়ে যাবে।  তা ঝগড়াও চলত, স্ত্রীকে পেটানোও চলত।  প্রায় নিত্য ব্যাপার দাঁড়িয়েছিল।

তবু শনিবার ঈদের ছুটি কাটাতে স্বামীকে নিয়েই পিসির বাড়ি গিয়েছিলেন ওই তরুণী।  তবে বিবাদ পিছু ছাড়েনি।  পিসি-শাশুড়ির বাড়ি গিয়ে বউয়ের মুখ ঝামটা শুনে এবার বেশ মানে লেগেছিল হবিউলের।

রোববার রাতে সেখানেও ঝগড়া শুরু হতেই তেতে উঠেছিল হবিউল।  রেগে গিয়ে বউয়ের হাত চেপে ধরে অমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছিল সে।  

ওই নারীর মা-বাবার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মেয়ে আমাদের জানিয়েছে, হবিউলের সম্পর্কের কথা।  আপত্তি করলে কপালে জুটতো মারধর।  এবার যা করল তাতে মেয়েকে রাখতেই সাহস হচ্ছে না।
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে