আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসলাম বিষয়ক বক্তা জাকির নায়েকের বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেয়া পাল্টা জবাব দিয়েছেন তিনি।
গতকাল সোমবার কেনিয়ার নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া বক্তৃতায় জাকির নায়েকের সমালোচনা করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ঘৃণা ও সহিংসতার প্রচারকরা আমাদের সমাজ গঠনের প্রতি হুমকি হচ্ছে।
এ সময় চরমপন্থী আদর্শবাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান মোদি।
এর পাল্টা জবাব দেন জাকির নায়েক। এর প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, আমি সন্ত্রাসবাদ বা সহিংসতাকে সমর্থন করি না। আমি কখনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে সমর্থন করি না।
এ খবর দিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
খবরে বলা হয়, মোদি বলেন, যারা সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেয় এবং রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে তাদের প্রতি নিন্দা জানাই।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে ৫ জঙ্গি নিহত হয়। এরপরই নিহত জঙ্গিদের মধ্যে দুজন জাকির নায়েকের ভক্ত ছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সেই থেকে আলোচনায় উঠে আসেন জাকির নায়েক।
এদিকে ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সামান্যতম প্রমাণও মেলেনি বলে মহারাষ্ট্র স্টেইট ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্টের (এসআইডি) তথ্যে উঠে এসেছে।
যদিও তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে আনিত অভিযোগ নিয়ে বিশ্ব মিডিয়া এখন সরগরম। তবে এর সত্যতা কতটুকু তা নিয়েই যাচাই করছে সংস্থাটি। অবশ্য জাকির নায়েকের ভক্তরা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে নারাজ।
ভারতে ফিরলে তাকে গ্রেফতার করা হবে এমন গুঞ্জন শোনা গেলেও আপাতত গ্রেফতারের কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছে যাচাই করা সংস্থাটি।
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম 'দ্য হিন্দু'র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এসআইডির সিনিয়র এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে 'দ্য হিন্দু'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে ভারতে এবং ভারতের বাইরে দেয়া জাকির নায়েকের শত শত বক্তৃতার ইউটিউব ভিডিওসহ অন্যান্য তথ্যাদি পরীক্ষা করেছে সংস্থাটি।
যেখানে আইএসের প্রসারে তার বক্তৃতা প্রভাব ফেলেছে এমন দাবি উঠলে হায়দ্রাবাদের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে সেগুলো যাচাই করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর্যবেক্ষণ উপর মহলকে জানানো হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ইংরেজিভাষী ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগেরই প্রমাণ মেলেনি। শুধুমাত্র যে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া যায়, তা হলো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা।
কিন্তু সেটিও তার বক্তৃতা থেকে প্রমাণ করা সম্ভব না। তবে আমরা তার গতিবিধি নজরে রেখেছি। যদি জাকির নায়েক তার অবস্থান থেকে কখনো সরে যান, কেবলমাত্র তখনই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা সম্ভব।
জাকির নায়েকের সাবেক এক সহকর্মীর বক্তব্যও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান এসআইডি কর্মকর্তা। ওই ব্যক্তি এখন আর জাকির নায়েকের সঙ্গে কাজ করেন না।
তিনি বলেছিলেন, বক্তৃতা থেকে প্রাপ্ত অর্থ জাকির নায়েক শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন। শেয়ারবাজারে লাভের জন্যই 'বক্তৃতা বাণিজ্য' চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কোন অপরাধ হতে পারে না বলেও জানান ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
মুম্বাইয়ে জাকির নায়েকের সমর্থকরা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা একটি অভিযোগও সঠিক নয়। তার আইনজীবী মুবিন সোলকারের দাবি, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগেরই সত্যতা নেই। এমনকি 'ঘৃণা ছড়ানো'র অভিযোগও পুরোপুরি মিথ্যা। সন্ত্রাসবাদে উস্কানি দেয়ার অভিযোগের প্রশ্নই ওঠে না।
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম