আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফের অশান্তি মাথাচাড়া দিল কাশ্মীরে। গতকালটা মোটামুটি নির্বিঘ্নেই কেটেছিল। কিন্তু সেই শান্তি ছিল ক্ষণস্থায়ী।
শুক্রবার কাশ্মীরের নানা জায়গায় ফের পুলিশ, নিরাপত্তাবাহিনীকে টার্গেট করে পাথর ছোঁড়ে বিক্ষুব্ধ যুবকরা। কার্ফু অগ্রাহ্য করেই বারামুলা, সোপোর টাউন, রফিয়াবাদ, বান্দিপোরা, কুলগাম, পুলওয়ামায় রাস্তায় নামে তারা।
এতে বলি হয়েছে একজন। জখম হয় ৯ নিরাপত্তাকর্মীসহ ২৩ জন। গ্রেনেড হামলা চলে থানায়, সাথে গুলিও।
নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর আজই ছিল প্রথম শুক্রবার।
সে কথা মাথায় রেখে হিংসা, গোলমাল পাকানোর আশঙ্কায় কাশ্মীর উপত্যকার দশটি জেলাতেই কার্ফু জারি করে প্রশাসন।
কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। জায়গায় জায়গায় সংঘর্ষ হয়। নিরাপত্তাবাহিনীকে টার্গেট করে পাথর ছুঁড়তে থাকে উত্তেজিত জনতা।
বারামুলার ডেলিনায় আক্রান্ত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর টহলদার দল। তিন নিরাপত্তাকর্মী জখম হন। পাল্টা নিরাপত্তাবাহিনী গুলি চালালে জখম হয় তিন বিক্ষোভকারী।
সোপোরেও পাথর ছোঁড়ে একদল যুবক। জবাবে পেলেট গান থেকে গুলি চলে। আহত হয় চারজন। কুলগামের ইয়ারিপোরার থানা লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। চলে গুলিও।
এক পুলিশ কর্তা জানান, সম্ভবত পাথর ছোঁড়া বিক্ষোভকারীদের ভিড়ে মিশে গিয়ে সন্ত্রাসবাদীরাই হামলা করেছে ওই থানায়।
এতে অন্তত ৬ জন পুলিশকর্মী জখম হন। একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে খবর। আগে বলা হয়েছিল, এক পুলিশকর্মী হামলায় নিহত হয়েছেন।
কিন্তু পরে থানার ভেতর থেকে আহতদের বের করে আনার পর দেখা যায়, সবাই জীবিত রয়েছেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেও হামলা করা হতে পারে, এ ভয়ে তাদের হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
কুপওয়ারার ড্রাগমুলায় নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলা চালায় জনতা। পাল্টা গুলিতে জখম হয় তিনজন। মুস্তাক আহমেদ গনাই নামে তাদের একজন পরে মারা যায়।
গান্দেরবলের মণিগামে পাথর ছোঁড়া জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। মারাত্মক জখম হয় এক যুবক। পাট্টানেও সংঘর্ষে জখম হয় দুজন।
কাশ্মীরের সার্বিক অশান্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুক্রবার নিয়ে দ্বিতীয় দিন বন্ধ রাখা হয় অমরনাথ যাত্রা। জম্মু থেকে কোনও তীর্থযাত্রীকে কাশ্মীর উপত্যকার দিকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
অশান্তি, গুজব ছড়ানোর আশঙ্কায় মোবাইল পরিষেবার ওপর বিধিনিষেধও বহাল রাখা হয়েছে। একমাত্র বিএসএনএসের পোস্ট পেইড পরিষেবাই মিলছে। টানা সাতদিন বন্ধ রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও।
এদিকে নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে নিরপরাধ নাগরিকদের মরতে হচ্ছে, এহেন অভিযোগ তুলে উপত্যকা থেকে কার্ফু প্রত্যাহারের দাবিতে চলতি হরতালের মেয়াদ ১৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তথ্যসূত্র : এবিপি
১৫ জুলাই ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম