আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ জার্মানির এক শহরে যাত্রীবাহী ট্রেনে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে ছুরি ও কুড়াল নিয়ে হামলা চালিয়েছে এক আফগান কিশোর। এতে তার অস্ত্রের আঘাতে চার যাত্রী জখম হন। একপরে পুলিশের গুলিতে ওই কিশোর নিহত হয়েছে।
ফ্রান্সের নিস শহরে গত সপ্তাহে সন্ত্রাসী হামলায় ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রতিবেশী দেশ জার্মানির নাগরিকদের শঙ্কার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল। হামলার পর উজবার্গ শহরের হাইডেনজেগফিল্ড রেললাইনে হেলিকপ্টারে করে অভিযান চালিয়ে ওই দুর্বৃত্তকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ।
জার্মান পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ৯টার দিকে জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশের উজবার্গ ও ওশেনফুর্ট শহরের মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনটিতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। ছুরি ও কুড়াল নিয়ে অতর্কিতে যাত্রীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ১৭ বছরের এক আফগান কিশোর। তার এলোপাথাড়ি কোপে যাত্রীদের রক্তে ভেসে যায় ট্রেনের কামরার মেঝে।
হামলায় কমপক্ষে চার যাত্রী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। প্রাথমিক খবরে আহতের সংখ্যা ২০ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে চারে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই হামলার ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন কমপক্ষে ১৪ যাত্রী। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
হামলার পর ট্রেন থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল ওই হামলাকারী আফগান কিশোর। কিন্তু উজবার্গ শহরের হাইডেনজেগফিল্ড রেললাইনে হেলিকপ্টারে করে অভিযান চালানো পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে। হামলার পর ওয়েজারবুর্গ-হাইডেনজেগফিল্ড এবং ওশেনফ্রুটের রেল চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হামলার পরে উজবার্গ-হাইডেনজেগফিল্ড এবং ওশেনফ্রুটের রেল চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হামলা সম্পর্কে বাভারিয়া রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জোয়াকিম হারম্যান বলেছেন, ১৭ বছরের ওই আফগান শরণার্থী ওশেনফুর্ট শহরের কাছে বসবাস করত। সোমবার রাতে সে হঠাৎ করে ছুরি ও কুড়াল হাতে ট্রেনের যাত্রীদের ওপর হামলা করে। তবে তিনি ওই হামলাকারীর পরিচয় উল্লেখ করেননি।
হামলার সময় ওই শরণার্থী ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করেছিল বলেও দাবি করেছেন জোয়াকিম হারম্যান। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তবে তিনি হামলায় আহতদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেননি।
এর আগে গত মে মাসে জার্মানির মিউনিখ শহরের এক রেলওয়ে স্টেশনে হামলার ঘটনায় একজন নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছিল। তবে সেটি কোনো জঙ্গিহামলা ছিল না। হামলাকারী ছিলেন মানসিকভাবে অসুস্থ এবং পরে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গতবছর ১০ লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল জার্মানি, যাদের দেড় লাখই আফগান শরণার্থী। তবে হামলাকারী ওই সময় দেশটিতে এসেছিল কি না তা স্পষ্ট নয়। কেন না এর আগে থেকেই বহু আফগান উদ্বাস্তু জার্মানিতে বসবাস করছে।
১৯ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম